• ‘গ্রেফতারি বেআইনি, শুরু হল না বিচারপ্রক্রিয়াও’! ইডির মামলায় জামিনের আর্জি শাহজাহানের
    আনন্দবাজার | ১৯ মার্চ ২০২৫
  • ইডির মামলায় জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ সন্দেশখালির ‘সাসপেন্ডেড’ (নিলম্বিত) তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। বুধবার কলকাতার বিচারভবনে ইডির বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়। ইডিও জামিনের বিরোধিতা করে। পরবর্তী শুনানি ৭ এপ্রিল।

    আদালতে শাহজাহানের আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর মক্কেলের গ্রেফতারিই বেআইনি। শুধু তা-ই নয়, দীর্ঘ সময় ধরে মামলা চলছে। কিন্তু এখনও বিচারপ্রক্রিয়াও শুরু হল না। সেই কারণেই জামিনের আবেদন করা হয়েছে।

    গত বছর ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। সেখানে তাঁদের হামলার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। তার পর থেকেই পলাতক ছিলেন শাহজাহান। ইডির উপর হামলার অভিযোগ ওঠার কয়েক দিন পর থেকেই সন্দেশখালিতে শাহজাহান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন স্থানীয়দের বড় অংশ। মহিলা নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে। পাশাপাশিই জমিদখল, মাছের ভেড়ির লিজ়ের টাকা না দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামে বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি। সেই আবহে শাহজাহানকে দল থেকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। এর পরেই রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। তার পরে শাহজাহানকে তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি শাহজাহান।

    রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলার তদন্তে গ্রেফতার হওয়া জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সূত্রে প্রথম প্রকাশ্যে আসে শাহজাহানের নাম। চার্জশিটে ইডি আগেই দাবি করেছে, সন্দেশখালিতে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে ফেলেছিলেন শাহজাহান। এলাকায় তিনিই ছিলেন শেষ কথা। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার, জোর করে জমি দখল করে নেওয়া, বিঘার পর বিঘা চাষের জমিতে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকিয়ে মাছের ভেড়ি তৈরি করা, টাকা তোলার মতো অভিযোগ রয়েছে। ইডির দাবি, সন্দেশখালিতে একাই ‘রাজত্ব’ করতেন শাহজাহান। কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক বা সাংসদের প্রভাব সেখানে খাটত না। সেখানেই নিজের ‘দুর্নীতি’র জাল বিছিয়ে রেখেছিলেন শাহজাহান। কালো টাকা সাদা করতে নানা রকম পন্থা অবলম্বন করতেন তিনি।

    চার্জশিটে ইডির আরও দাবি করেছে, সন্দেশখালিতে মাছের ব্যবসা, ইটভাটার ব্যবসা চালাতেন শাহজাহান। এই ব্যবসার মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করার কাজ চলত। এই কাজে তাঁর সঙ্গী হতেন ভাই আলমগির শেখ এবং ঘনিষ্ঠ শিবপ্রসাদ হাজরা, দিদার বক্স মোল্লারা। এমনকি ভুয়ো ব্যবসায়ী বানিয়ে শাহজাহান মাছ বিক্রি করতেন বলেও অভিযোগ।

    শাহজাহানের মামলায় এখনও পর্যন্ত ২৬১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এ ছাড়া শাহজাহানের তিনটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শাহজাহানের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেখানে কয়েক কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে। ইডির দাবি, এই দুর্নীতির কালো টাকা একটি ট্রাস্টে বিনিয়োগ করতেন শাহজাহান। ট্রাস্টের নামে জমিও কিনতেন। তাতে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেত।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)