মহিলার মৃতদেহ পেতে হাইকোর্টে লিভ ইন পার্টনার, হস্তান্তরের নির্দেশ আদালতের
হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ মার্চ ২০২৫
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একসঙ্গে এক ছাদের তলায় থেকেছেন। সেই লিভ ইন সঙ্গিনীর দেহ পেতে গিয়ে প্রায় দেড় মাস ধরে ঘুরেছেন ব্যক্তি। পুলিশ এবং মর্গ ওই ব্যক্তিকে তাঁর সঙ্গিনীর দেহ হস্তান্তর করতে আপত্তি জানায় শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্ত হয়ে সুরাহা পেলেন ব্যক্তি। কলকাতা হাইকোর্ট অবিলম্বে মহিলার মৃতদেহ তাঁর লিভ ইন পার্টনারের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, মাঝবয়সি এই লিভ ইন যুগল ১২ বছর ধরে গড়ফার ঝিল রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে একসঙ্গে থাকছিলেন। তার আগেও তাঁরা অন্যত্র একসঙ্গে থেকেছেন। তবে সমস্যা শুরু হয় ৩ ফেব্রুয়ারি। সকাল ৬টার দিকে আচমকা বছর ৩৬-এর ওই মহিলার পেটে ব্যথা শুরু হয়। ঘটনায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে সকাল ৭ টা ৪৬ মিনিটে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের তরফে থানায় মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এরপর গড়ফা থানার পুলিশ তদন্তে নেমে তাঁদের দুজনের মধ্যে লিভ ইন সম্পর্কের কথা জানতে পারে। আর তারপরেই সমস্যা শুরু হয়।
মহিলার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মোমিনপুরের কাঁটাপুকুর মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশ মৃত মহিলার সঙ্গীকে জানিয়েছিল, যে রিপোর্ট ছাড়া তাঁকে মৃতদেহ হস্তান্তর করা যাবে না। জানা যায়, মহিলার বাবা-মা ১৯ বছর বয়সেই মারা গিয়েছিলেন। তাই তাঁর দেহের ওই ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনও দাবিদার খুঁজে পায়নি পুলিশ। এদিকে, সেই ঘটনার সপ্তাহ খানেক পরেও মৃতদেহ না পাওয়ায় মর্গ এবং থানায় লিভ ইন পার্টনার দেহ পাওয়ার জন্য আবেদন জানান ওই ব্যক্তি। কিন্তু, দেহ না পেয়ে শেষে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
ওই ব্যক্তির আবেদন অনুযায়ী, তিনি গত ১২ ফেব্রুয়ারি মর্গে একটি আবেদন করেন যা গড়ফা থানা ওসির কাছে পাঠানো হয়। এরপর তিনি যাদবপুর এবং গড়ফা উভয় থানাতেই চিঠি লেখেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতা পুরসভার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকেও চিঠি লেখেন। অবশেষে, ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত দাবি জানান। মৃতদেহ হস্তান্তরের জন্য আবেদন জানান। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চ তদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃত মহিলা গত কয়েক বছর ধরে আবেদনকারীর সঙ্গে বসবাস করছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে কোনও সন্দেহজনক কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শেষকৃত্যের জন্য মৃতদেহটি ওই ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করতে হবে।