• আরজি করের চিকিৎসক খুন-ধর্ষণের মামলাতেও উঁকি দিচ্ছে বাক্স রহস্য!
    এই সময় | ২০ মার্চ ২০২৫
  • ফেলুদার কাহিনি, সত্যজিৎ রায়ের ‘বাক্স রহস্য’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। তার ৫৩ বছর পর, বাস্তবে তৈরি হয়েছে আর এক বাক্স রহস্য। আরজি কর খুন–ধর্ষণ মামলায়।

    আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসক–ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া সঞ্জয় রায়ের বাক্স নিয়ে এই রহস্য। ঘটনার সময়ে কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়ের জামাকাপড় ও নিত্য ব্যবহার্য সরঞ্জাম–সহ একটি বাক্স তদন্তকারীরা সল্টলেকে বাহিনীর ফোর্থ ব্যাটেলিয়নের ব্যারাকে তার ঘর থেকে বাজেয়াপ্ত করেছিলেন।

    ওই ব্যারাকে একা একটি ঘরে থাকত সঞ্জয়। কিন্তু সিবিআই সূত্রের খবর, তাদের জেরায় সঞ্জয় নিজের দু’টি বাক্সের কথা জানিয়েছে এবং তার দাবি, দ্বিতীয় বাক্সটিতে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড–সহ কিছু পরিচয়পত্র এবং নথি ছিল।

    কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের এ বিষয়ে সিবিআইয়ের তরফে মৌখিক ভাবে জানতে চাওয়া হলে তাঁদের বক্তব্য, এ রকম কোনও বাক্সের কথা তাঁরা জানেন না। সিবিআই সূত্রের খবর, পুলিশ ব্যারাকে সঞ্জয়ের ঘরে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না যে, সেখান থেকে কোনও সূত্র মিলতে পারে। সিবিআই খোঁজখবর নিয়েও সেই বাক্সের ব্যাপারে কিছু জানতে পারেনি।

    প্রসঙ্গত, আরজি করের নির্যাতিতার মা–বাবা কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন, ধর্ষণ–খুন মামলায় সিবিআই যে তদন্ত করেছে, তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। আদালতের নদজারিতে নতুন করে, আরও বিস্তারিত তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। সোমবার, ১৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানান, নির্যাতিতার পরিবারের তরফে দায়ের করা আবেদনের শুনানি করতে পারবে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ।

    আরজি কর খুন–ধর্ষণ মামলায় ‘বাক্স রহস্য’–র সমাধানের লক্ষ্যে আগামী দিনে সিবিআই কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সম্প্রতি ১১ জন পুলিশকর্মী ও অফিসার এবং কয়েক জন চিকিৎসককে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।

    সিবিআই সূত্রের খবর, জেরায় সঞ্জয় জানায় যে, গত বছরের ৯ অগস্ট কলকাতা পুলিশ তার পোশাক বাজেয়াপ্ত করেছিল ব্যারাকে তার ঘর থেকে। সেই সময়ে সে ব্যারাকে ছিল না, সে তখন ছিল লালবাজারে। সিবিআইয়ের কাছে সঞ্জয়ের দাবি, কলকাতা পুলিশ তার সেই সব জিনিস ১২ অগস্ট বাজেয়াপ্ত বলে দেখায়।

    কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা ব্যারাকে তার ঘর খোলার আগে সঞ্জয়কে হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিয়ো কল করেন এবং ঘরের চাবি কোথায় রাখা, সেটা দেখানো হয়। এর প্রেক্ষিতে সঞ্জয়কে সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, সিজ়ার লিস্টে তো তার সই আছে, তা হলে?

    সিবিইয়ের বক্তব্য, সঞ্জয় জেরায় বলে, ‘এটা প্ল্যান করে করা হয়েছে।’ সিবিআইয়ের দাবি, তল্লাশি ও সিজ়ার করার সময়ে কলকাতা পুলিশের ভিডিয়োগ্রাফি এবং তখন নিজের পোশাক, জুতো, চাবি, হেলমেট, চার্জার নিজের বলে চিহ্নিত করা প্রসঙ্গে সঞ্জয় জেরায় বলে, ‘এই ভিডিয়ো প্ল্যান করে করা হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)