এই সময় বাঁকুড়া: দীর্ঘদিন আগে টাকা চলে এলেও উন্নয়নমূলক কাজ করছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। এমনই অভিযোগ তুলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক–সহ অন্য শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। বাঁকুড়া–২ ব্লকের মগরা হাইস্কুলের ঘটনা। ওই বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত স্কুলে আটকে থাকেন শিক্ষকরা।
ঘেরাও চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রধান শিক্ষক মুকেশ পাত্র। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। অভিভাবকদের বক্তব্য, ২০১৮ সাল থেকে স্কুলের উন্নয়নের জন্য ধাপে ধাপে ৫৪ লক্ষ টাকা এসেছে। কিন্তু সেই সরকারি টাকা খরচ করা হয়নি। বার বার চাওয়া সত্ত্বেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দেখাচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অভিভাবকদের দাবি, প্রধান শিক্ষককে পরিষ্কার করে জানাতে হবে, ওই টাকা কোথায়, কী ভাবে আছে অথবা আদৌ আছে কি না। যদি থাকে, তা হলে উন্নয়নের কাজ কবে শুরু হবে, জানাতে হবে। অনেকেরই সন্দেহ, সেই অর্থ তছরুপ হতে পারে, তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ নীরবতা পালন করছেন।
প্রধান শিক্ষক মুকেশ পাত্র বলছেন, ‘শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে আমি কাজ শেষ করতে পারিনি। টাকা স্কুলের অ্যাকাউন্টেই আছে। তিন মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ করে শিক্ষা দপ্তরে ইউসি জমা দেবো।’
বাঁকুড়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পীযূষকান্তি বেরার বক্তব্য, ‘অতিরিক্ত ক্লাসরুম তৈরি, স্কুলের চারপাশে পাঁচিল নির্মাণ এবং তা সংস্কারের জন্য ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ওই স্কুলকে প্রায় ৫৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭৮৭ টাকা সরকারি অনুদান দেওয়া হয়েছিল।
বারবার তার ইউসি (ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট) চাওয়া হলেও প্রধান শিক্ষক তা দেননি। সম্প্রতি আমরা ওই স্কুল পরিদর্শন করি। প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, সাত দিনের মধ্যে খরচের হিসেব দিতে হবে।’
গত সোমবার প্রধান শিক্ষক জানান, স্কুলের উন্নয়নের জন্য ওই টাকা খরচ করতে পারেননি। আরও তিন মাস সময় চেয়েছেন। বাঁকুড়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের মন্তব্য, ‘আমরা ওঁর আবেদন শুনেছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। যদি তদন্তে দেখা যায় আর্থিক কোনও বেনিয়ম হয়েছে, তা হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’