• ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত মুর্শিদাবাদের দুই পরিযায়ী শ্রমিক, শোকের আবহ গ্রামে...
    আজকাল | ২০ মার্চ ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে দেশের দুই প্রান্তে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের দুই শ্রমিকের। বৃহস্পতিবার মৃত শ্রমিকদের দেহ জেলায় ফিরতেই শোকের আবহ নেমে এসেছে দু'টি গ্রামে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সুতি থানার অন্তর্গত আহিরণ শেখপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাদেক শেখ (৪১) নামে এক ব্যক্তি ওড়িশায় রাজমিস্ত্রি সরবরাহের কন্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করতেন। গত তিন মাস আগে বাড়ি ছেড়ে ওড়িশায় যান সাদেক। সূত্রের খবর, দিন দুয়েক আগে মদ্যপানের জন্য টাকা না দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাদেকের সঙ্গে একটি নির্মাণস্থলে কর্মরত মুর্শিদাবাদের অপর এক পরিযায়ী শ্রমিক রেজাউল শেখের বচসা বাঁধে। অভিযোগ, সেই সময় রেজাউল তাঁকে মারধর করে পাশেই নির্মীয়মান একটি চৌবাচ্চার মধ্যে ফেলে দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সাদেককে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত ওই শ্রমিকের ভাই মান্নার শেখ বলেন, 'আমার দাদার অধীনেই রাজমিস্ত্রির কাজ করতো রেজাউল। টাকা নিয়ে একদিন কাজ করার পর আর না আসায় দ্বিতীয় দিন যখন রেজাউল কাজ করতে আসে সেই সময় দাদা তাঁকে একটু বকাবকি করেছিল।  সেই সময় রেজাউল মদ খাওয়ার জন্য ১০০ টাকা চায়। দাদা সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় হঠাৎই রেজাউল আমার দাদাকে মারধর করে এবং একটি জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেয়। সেখানেই মাথায় চোট লেগে আমার দাদার মৃত্যু হয়েছে।'' অপর একটি ঘটনায় মেয়েদের বিয়ের জন্য নেওয়া ধারের বিপুল টাকা শোধ করার জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে দক্ষিণ ভারতের একটি রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের এক শ্রমিকের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের নাম রব্বুল শেখ (৩৮)। তাঁর বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ থানার জরুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ওমরপুর গ্রামে। পঞ্চায়েতের প্রধান ইয়াকুব আলি বলেন, ''মৃত রব্বুলের চার মেয়ে, দুই ছেলে। তিন মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য ওই ব্যক্তি বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ দেনা করেছিল। পাওনাদার সেই টাকা ফিরে পাওয়ার জন্য তার উপর চাপ দিচ্ছিল।'' তিনি আরও বলেন, ''প্রায় পঁচিশ দিন আগে চেন্নাইতে কাজে গিয়েছিল রব্বুল। আমরা জানতে পেরেছি, দিন দুই আগে সেখানে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে কাজ করার সময় হঠাৎই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও বাঁচানো যায়নি।' পঞ্চায়েত প্রধান জানান, মৃত ওই পরিবারকে সমস্ত রকমভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে। দেহ বৃহস্পতিবার গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)