ভার্চুয়াল বৈঠকে এক ফ্রেমে থাকা সুব্রত-অভিষেকই দল সামলাবেন মমতার অনুপস্থিতিতে!
হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ মার্চ ২০২৫
'আমাদের ফোন অলওয়েজ অ্যাভেলেবল থাকবে। তবুও যদি কোনও প্রয়োজন হয় তাই। দলের ব্যাপারটা আপনারা জানেন, সুব্রত বক্সি আছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন, ওঁদের সঙ্গে অন্যরাও আছেন। তাঁরাই দলকে দেখে রাখবেন।'
এই মন্তব্যের বক্তা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসকদলের সর্বোময় কর্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী শনিবার লন্ডন যাচ্ছেন তিনি। সব মিলিয়ে মোট সাতদিনের বিলেত সফর। রয়েছে ঠাসা কর্মসূচি। মমতার সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-সহ অন্যরাও যাচ্ছেন।
মমতা নিজে যখন রাজ্যে উপস্থিত থাকেন, তখন প্রশাসন এবং দল - দু'টি ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের রাশ থাকে তাঁরই হাতে। কিন্তু, যেহেতু টানা সাাতদিন তিনি দেশের বাইরে থাকবেন, তাই রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি যাতে দল চালাতেও কোনও সমস্যা না হয়, সেই ব্যবস্থা পাকা করে রাখছেন তিনি।
সরকার ও প্রশাসন চালানোর জন্য তৈরি করে দিয়েছেন বিশেষ টাস্ক ফোর্স। আর দল চালানোর ক্ষেত্রে, তাঁর উপরোক্ত মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট - যৌথভাবে সেই দায়িত্ব সামলাবেন দলের রাজ্য সভাপতি তথা প্রবীণ নেতা সুব্রত বক্সি এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা তরুণ ব্রিগেডের 'প্রধান' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানে তিনি যেমন তাঁর অনুপস্থিতিতে সরকার চালানোর জন্য টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা জানান, তেমনই জানিয়ে দেন, তিনি লন্ডনে থাকাকালীন দলের যে কোনও প্রয়োজনে কর্মীরা সুব্রত ও অভিষেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
এক্ষেত্রে মমতার আরও বক্তব্য হল, দলের অন্দরে অনেক কাজ রয়েছে। তাই তিনি সমস্ত দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, 'এটা ভাগ করে দিয়ে যাচ্ছি - এই কারণে, আসলে অনেক সময় প্রবলেম হয় তো, তখন কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, এই ব্যাপারটা ম্যাটার করে।... কোনও প্রয়োজন হলে ওঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনও পলিসিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার হলে আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করছে, মমতার এই দলের কাজ ভাগ করে দেওয়া এবং যৌথভাবে সুব্রত ও অভিষেকের উপর দায়িত্ব দিয়ে যাওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। উল্লেখ্য, গত শনিবার দলের তরফে যে ভার্চুয়াল 'ভূত তাড়াও' বৈঠক হয়েছিল, সেই বৈঠকের নেতৃত্বের আসনে একই ফ্রেমে ধরা দিয়েছিলেন অভিষেক ও সুব্রত।
ভোটমুখী বাংলায় যাতে তাঁর অনুপস্থিতিতেও কোনও অবস্থাতেই শাসকদলের অন্দরে ফের নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব চাগাড় দিয়ে না ওঠে, তা নিশ্চিত করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কৌশলী অবস্থান নিয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের।