আদালত কক্ষের ভিতর তখন স্বয়ং বিচারক উপস্থিত রয়েছেন। সেখানে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে সেই এজলাসে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন যুব নেতা কুন্তল ঘোষও। তাঁর দাবি, আদালতের কাজ চলাকালীনই নাকি এজলাসের বাইরে ডাকা হয় এবং সেখানেই তাঁর কাছে ১৯ কোটি টাকা দাবি করেন দুই ব্যক্তি!
আজ এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছেন কুন্তল। বিষয়টি নিয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। এমনকী, কুন্তলের আবেদন ছিল, তাঁর অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাই করে দেখতে প্রয়োজনে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হোক।
উল্লেখ্য, এদিন কলকাতায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি - এর বিশেষ আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, শুনানির প্রায় শেষ পর্যায়ে হঠাৎই বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কুন্তল। তিনি দাবি করেন, দুই ব্যক্তি তাঁকে এজলাসের বাইরে ডেকে নিয়ে যান এবং বলেন, 'দু'জন লোক আমাকে বাইরে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলে তাপস মণ্ডলের টাকা দে।' প্রসঙ্গত, বহু আগেই নিয়োগ দুর্নীতিতে এই তাপস মণ্ডলের নামও জড়িয়েছিল।
কুন্তলের মুখে এহেন অভিযোগ শুনে বিচারক তাঁকে বলেন, তাঁর আর এজলাসের বাইরে যাওয়ার দরকার নেই এবং তিনি যেন আদালত কক্ষের ভিতরেই বসে থাকেন। এমনকী, এর পর যেদিন শুনানির তারিখ থাকবে এবং কুন্তলকে আদালতে আসতে হবে, সেদিনও যাতে তিনি ভিতরেই থাকেন, সেই পরামর্শও দেন বিচারক।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, পরবর্তীতে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আদালতের কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক -এর কাছে লিখিত অভিযোগও করতে যাওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে এই আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্ব চলছে। এদিন যিনি আদালতে সাক্ষ্য দেন, তিনি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে হঠাৎই খবরের শিরোনামে উঠে আসেন কুন্তল ঘোষ। নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। যার জেরে দীর্ঘ সময় ধরে হাজতবাস করতে হয় তাঁকে। বর্তমানে অবশ্য কুন্তল জামিনে মুক্ত।
এর আগে একাধিকবার কুন্তল ঘোষ দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা - সিবিআই ও ইডি - এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, তাঁকে তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে হেনস্থা করা হচ্ছে, তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আর, এবার তিনি আদালত চত্বরেই আরও একটি গুরুতর অভিযোগ করলেন!