• পদ্মে কাঁটা খোদ শুভেন্দু? ‘চ্যাংদোলা’ মন্তব্যে ক্ষোভ বিজেপির অন্দরেই?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২১ মার্চ ২০২৫
  • 'সংখ্য়ালঘু তোষণ' ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে কি একটু বেশিই বলে ফেলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী? এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। এমনকী, শুভেন্দুর 'চ্যাংদোলা' মন্তব্য শুনে বিজেপির অন্দরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

    এই প্রসঙ্গ সংবাদ প্রতিদিন.ইন - এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিজেপি শিবিরেরই কয়েকজন মণ্ডল স্তরের নেতার বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। যা থেকে এটা স্পষ্ট, যেভাবে বিরোধী দলনেতা সংখ্যালঘুদের বা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষকে 'টার্গেট' করছেন, তাতে দলের একেবারে তৃণমূল স্তরের নেতা ও কর্মীদের একটা বড় অংশ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও হতাশ!

    প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবির ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। যার জেরে উভয় পক্ষই শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সেই কথার লড়াইয়ের মাঝেই শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছিলেন, 'বিজেপি ক্ষমতায় এলে ওদের যে ক'জন মুসলিম বিধায়ক জিতে আসবে, তাঁদের চ্যাংদোলা করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলব।'

    সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনুসারে, দলের নেতার এমন মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বসিরহাটের স্বরূপনগরের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি তারক সাহা। শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বেশ কিছু যুক্তিপূর্ণ প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

    সংবাদমাধ্যমকে তারক সাহা বলেন, 'বিরোধী দলনেতা বলছেন সংখ‌্যালঘু ভোটের প্রয়োজন নেই। কোনও রাজনৈতিক নেতা এই ধরনের কথা বলতে পারেন না। তাহলে আমাদের দলের হয়ে সংখ‌্যালঘু কর্মীরা কেন খেটেছেন?'

    বিরক্তি ও ক্ষোভের একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপির আরও এক মণ্ডল সভাপতি হাসনায়ক হোসেন মণ্ডলের গলাতেও। তিনি বলেন, 'শুভেন্দুবাবুর ভাষা শুনে মনে হয়, বিজেপিকে বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না। গত লোকসভা ভোটে দলের আসন সংখ‌্যা ১৮ থেকে ১২-তে নেমে আসার জন‌্য উনিই দায়ী!'

    খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস শুভেন্দুর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে। দলের তরফে কুণাল ঘোষ যা বলেছেন, তার অর্থ হল - শুভেন্দু যা বলেছেন, তা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'সবকা সাথ সবকা বিকাশ' স্লোগানের উলটো। এই দু'টি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান একসঙ্গে থাকতে পারে না।

    কুণাল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, 'এসব কথা বলা যায় না। তাহলে বিজেপি সংখ‌্যালঘু মোর্চা তুলে দিক। মোদি সবকা সাথ সবকা বিকাশ 'নয়' বলুন। বিরোধী দলনেতার বিরোধিতা হচ্ছে বিরোধী দল থেকেই।'

    এমনকী, একটা সময় যিনি সরাসরি আরএসএ-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং যিনি রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন এখনও পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সেরা ফল করেছে, সেই দিলীপ ঘোষও শুভেন্দুর এই মন্তব্যের সঙ্গে সহমত হতে পারেননি। তাঁর মতে, এই ধরনের মন্তব্য কখনই কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)