এই সময়: রেকর্ড গড়ে ১২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৭৩ জনের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিয়ে শেষ হলো ৭৫ দিনের সেবাশ্রয় শিবির। ডায়মন্ড হারবার মডেলে জুড়ল নতুন পালক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই ৭৫ দিনে দুই পর্বে ৫৬১ টি ক্যাম্প হয়েছে।
গত ২ জানুয়ারি শুরু হয় সেবাশ্রয়। চিকিৎসা পরিষেবার পাশাপাশিই ৮ লক্ষ ৯৩ হাজারের বেশি মানুষের ডায়াগনস্টিক টেস্ট হয়েছে শিবিরে। বিভিন্ন ক্রিটিক্যাল কেস মিলিয়ে ৬ হাজারের বেশি রোগীকে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালেও হয়েছে চিকিৎসা। সেবাশ্রয় শিবিরের এই সাফল্য প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডলে অভিষেক বলেন, ‘দীর্ঘ ৭৫ দিনের এই পথচলা এ দিন শেষ হয়েছে। কিন্তু সেবাশ্রয় শিবিরের প্রভাব আগামী দিনে দেখতে পাওয়া যাবে। সেবাশ্রয় সমস্ত বাধা ভেঙে দিয়েছে। অজস্র মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে, যাঁরা কখনও ভাবেননি এই ভাবে পরিষেবা পাবেন।’
শিবিরে সাধারণ রোগ–ব্যাধির পাশাপাশি অনেকে জটিল রোগ নিয়েও হাজির হন। তাঁদের অন্যত্র রেফার করা হয়েছে। ৯ বছরের আলতাফের বিশেষ হার্ট সার্জারি হয়েছে। ২০-২৫ জন বিশেষজ্ঞের একটি দল ওই অপারেশনে যুক্ত ছিলেন। ২১ বছরের শেখ হাসিবুলের স্পাইনাল টিউমারের জটিল অস্ত্রোপচার হয় কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে। স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (SMA)-টাইপ ৩ রোগ আক্রান্ত ৩ বছরের নেহা মাঝি এবং দু’বছরের আলমিশা খাতুনের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে বেঙ্গালুরুর নিমহ্যান্সে।
কৃতী মান্না নামে এক তরুণী, যাঁর শরীরের ডান পাশে অস্বাভাবিক লাম্প ছিল, তাঁকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করে চিকিৎসা হয়। দু’জন রোগীর ককলিয়ার ইমপ্লান্টও হয়েছে। ক্যান্সার আক্রান্ত মামুদা বিবির সমস্ত ওষুধ সেবাশ্রয় শিবির থেকে সরবরাহ করা হয়। শিবিরে ৫০ জন রোগীকে কাস্টমাইজ়ড হিয়ারিং এইড দেওয়া হয়। সিলিকন যুক্ত এই ইয়ার–মোল্ডগুলির দাম প্রায় ৫ লক্ষ টাকা কিন্তু এই ৫০ জনকে তা নিখরচায় দেওয়া হয়েছে। শতাধিক প্রবীণ ব্যক্তির ছানি অপারেশন করে দেওয়া হয়েছে চশমা।
গঙ্গাসাগর মেলার সময়েও চলেছে এই শিবির। রাজস্থানের বাসিন্দা, তীর্থযাত্রী আশা দেবী গঙ্গাসাগর যাওয়ার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেবাশ্রয়ে চিকিৎসা হয় তাঁর। এর মডেল ক্যাম্পগুলিতে ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের সুযোগও ছিল। অনেকের ক্যান্সার ডিটেক্ট হয় সেখানে। এ ছাড়া নিখরচায় বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট, ইউএসজি, ইসিজি এবং এক্স-রে হয়েছে। এই সার্বিক চিকিৎসা পরিষেবা সাধারণ মানুষের হাতের কাছে পৌঁছে দিয়ে বৃহস্পতিবার এক্স–এ অভিষেক লেখেন, ‘শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে পর্যন্ত আমি ডায়মন্ড হারবারের সেবা করে যাব।’