• স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের পোশাক তৈরি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা
    এই সময় | ২১ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, কোচবিহার: ক্লাসে মন দিয়ে পড়াশোনা করছে ছেলেমেয়েরা। নীল–সাদায় ভরে উঠেছে স্কুল। মিড–ডে মিলেও একই রঙের ভিড়। রঙিন এই স্কুলের ছবিটাকে সফল করে তুলছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তাঁদের হাতে তৈরি ইউনিফর্ম পরছে ছাত্র–ছাত্রীরা।

    কোচবিহার জেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল ইউনিফর্ম তৈরি করেই স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন মহিলারা। এই পোশাক তৈরি করেই ১৪ কোটি টাকারও বেশি পারিশ্রমিক পাচ্ছেন তাঁরা। সবমিলিয়ে এই কাজে জেলার দেড় হাজার গোষ্ঠীর প্রায় ১৬ হাজার মহিলা যুক্ত রয়েছেন। তাঁরা জেলার ৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৮৪ জন পড়ুয়ার জন্য পোশাক তৈরি করছেন। ইতিমধ্যে স্কুলে স্কুলে প্রথম ধাপে পোশাক পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে।

    কয়েক বছর ধরেই প্রাক প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের নীল–সাদা পোশাক দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের এই পোশাক তৈরির জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের। বর্তমানে প্রাক প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রদের প্রত্যেককে একটি করে হাফপ্যান্ট ও একটি করে হাফশার্ট দেওয়া হয়।

    এ ছাড়াও একটি করে ফুলপ্যান্ট ও একটি করে ফুলশার্ট দেওয়া হয়। ছাত্রীদের প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শার্ট ও টিউনিক দেওয়া হয়। দু’টি সেট করে তারা পাবে। তৃতীয় শ্রেণি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত স্কার্ট ও শার্ট দু’সেট করে দেওয়া হয়। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের চুড়িদার ও ওড়না দেওয়া হয়ে থাকে।

    কোচবিহার জেলা গ্রামোন্নয়ন সেল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৩ হাজার ২২৮টি স্কুলের ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৫৭৩ জন ছাত্র এবং ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩১১ জন ছাত্রী এ বার পোশাক পাবে। দুটো ধাপে তাদের পোশাক দেওয়া হবে। প্রথম ধাপের পোশাক ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। জেলার ৫০ শতাংশ বিদ্যালয়ে সেই পোশাক পৌঁছেও গিয়েছে।

    রাজ্য ‘তন্তুজ’ থেকে নীল–সাদা কাপড় নিয়ে তা পাঠাচ্ছে জেলাগুলিতে। সেই কাপড় দিয়ে গোষ্ঠীর মহিলারা স্কুলের পোশাক তৈরি করছেন। কেউ ছেলেমেয়েদের মাপ অনুযায়ী কাপড় কাটার কাজ করছেন। কেউ আবার করছেন সেলাইয়ের কাজ। এর মাধ্যমেই মহিলারা ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপ ও কাজ অনুযায়ী মজুরি পাচ্ছেন।

    সেই হিসেবেই কোচবিহার জেলার ১ হাজার ৫৬০টি গোষ্ঠী এই কাজে নিযুক্ত হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ঘরে বসে কাজ চলছে দিনরাত। পারিশ্রমিক হিসেবে এ বছর সবমিলিয়ে ১৪ কোটি ১০ লক্ষ টাকা গোষ্ঠীগুলি পেয়েছে বলে সূত্রের খবর।

    জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের আধিকারিক সৌমনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘স্কুলে স্কুলে পোশাক সরবরাহ গ্রামের মহিলাদের স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছে। তাঁদের আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে। প্রথম দফায় পোশাক পাঠানো শুরু হয়ে গিয়েছে। সর্বত্রই নির্দিষ্ট সময়ে পড়ুয়ারা পোশাক পেয়ে যাবে।’

  • Link to this news (এই সময়)