• ‘TMC চারবার আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছে।...’ শুভেন্দুর সঙ্গে কথার পরই বললেন বঙ্কিম!
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২১ মার্চ ২০২৫
  • ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, তাঁর সম্ভাব্য দলবদল নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধতেই ফোনে কথা হল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে, আর তারপর রাত গড়িয়ে সকাল হতেই নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন বিজেপি নেতা তথা চাকদার বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র ঘোষ। যদিও তাঁর দাবি, তিনি কোনও অবস্থান বদল-টদল করেননি। সংবাদমাধ্যমই তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করে অযথা বিতর্ক তৈরি করেছে!

    এই ঘটনা নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেই অনুসারে, বৃহস্পতিবার বঙ্কিমের একটি মন্তব্যের পর তাঁর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে পারা নিয়ে যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, 'তৃণমূল চারবার আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় আমাকে মারধর করে চরম অপমান করেছে। তাই এমন অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, কোনও দিন ওই দলে আমার মতো অত‍্যাচারিত, নির্যাতিত মানুষ যোগদান করতে পারবে না।'

    এই ঘটনা বা বিতর্ক বা জল্পনা, যাই বলা হোক না কেন, তার সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার। ওই দিন বিধানসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার পরই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুলে হইচই শুরু করে দেন বিজেপি বিধায়করা।

    তাঁদের অভিযোগ ছিল, বিমান যে বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক, সেই বারুইপুর পশ্চিমে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিজেপি বিধায়কদের আক্রান্ত হতে হয়েছে। এমনকী, বিরোধী দলনেতার গাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রতিবাদের প্রতীক হিসাবে বিধানসভা থেকে 'ওয়াক আউট' করে বিজেপি।

    ওয়াক আউট করা বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে বঙ্কিম ঘোষও ছিলেন। কিন্তু এভাবে অধিবেশন বয়কট করা নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'বাজেট অধিবেশনে স্বাস্থ্য দফতর বা শিক্ষা নিয়ে যে আলোচনা হল, সেখানে আমরা থাকতে পারলাম না। আমরা বয়কট করে বেরিয়ে এলাম। আমি বলব, এটা আমাদের ভুলই হয়েছে।'

    স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই মন্তব্য সামনে আসতেই জল্পনা শুরু হয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি এবার 'ফুলবদল' করতে চলেছেন বঙ্কিম? এদিকে, বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কানে তাঁর এহেন মন্তব্য করার খবর পৌঁছতেই তিনি নাম না করে বঙ্কিমের প্রশংসা করেন। অন্যদিকে, বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বঙ্কিমের মন্তব্যের সঙ্গে দলের অবস্থানের কোনও সম্পর্ক নেই।

    সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার রাতেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ হয় বঙ্কিমের। তিনি নাকি সেই সময় শুভেন্দুকে জানান, সংবাদমাধ্যমই তাঁর বক্তব্য বিকৃত করে সম্প্রচারিত করছে। আর, সেই কারণেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আদতে তিনি দলের অবস্থানবিরোধী কোনও মন্তব্যই করেননি। এরপর শুভেন্দুও তাঁকে এই ঘটনা নিয়ে কোনও প্রকার দুশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দেন বলে দাবি সূত্রের।

    সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবারের মন্তব্য নিয়ে বঙ্কিমের যে ব্যাখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে, তা হল - 'আমি বলেছিলাম, গত চার বছরে বিরোধী দলনেতা-সহ আমাদের বার বার সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলতে গেলে বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে আমাদের বক্তব্য বাদ দিয়ে দেন তিনি। আর রাজ‍্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কথা বললে অধিবেশনেই তৃণমূল বিধায়করা আমাদের দিকে তেড়ে আসেন। এমনকী, অধিবেশনে বিজেপি বিধায়কদের ধরে মারা পর্যন্ত হয়েছে। মার খেয়েও আমরাই সাসপেন্ড হয়েছি। স্পিকারের কারণেই যে আমরা স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা সংক্রান্ত বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি, সেই কথাই আমি বলতে চেয়েছিলাম।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)