• স্কুলের হীরক জয়ন্তীতে উৎসবের মেজাজ, মাতল কেশপুর
    এই সময় | ২১ মার্চ ২০২৫
  • সমীর মণ্ডল, কেশপুর

    স্কুলের হীরকজয়ন্তী বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গ্রামে বসল একশো ফুট উঁচু জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা খরচ করে স্কুলের সামনে তৈরি হয়েছে সেই স্ট্যান্ড। একশো ফুট উঁচুতে পতপত করে উড়ছে জাতীয় পতাকা, যা অনেক দূর থেকে নজরে পড়ছে।নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ১৭ মার্চ শুরু হয়েছে কেশপুরের গোলাড় সুশীলা বিদ্যাপীঠের হীরকজয়ন্তী বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান।

    এই উপলক্ষে বৃহস্পতিবার স্কুলে ছিল প্রীতিভোজের আয়োজন। উৎসবের মেজাজে এ দিন দুপুরে স্কুলে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক-সহ গ্রামের সব লোকজনকে দুপুরে খাওয়ানো হয়েছে। রোজা রাখার কারণে যাঁরা দুপুরে আসতে পারেননি তাঁদের জন্য রাতে খাবারের ব্যবস্থা করেছিল স্কুল। জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে খেয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ। রাতেও প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা ছিল। মেনুতে ছিল আলু ভাজা, ভাত, ডাল, সব্জি, চিংড়ি-আলু পোস্ত, ডিমের কারি, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি, পাঁপড়। স্কুলের অনুষ্ঠান সফল করতে হাত লাগান গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ।

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেশকুমার পড়িয়া বলেন, ‘এলাকার মানুষের সহযোগিতা পাই বলেই সব কিছু সম্ভব। অভিভাবক-অভিভাবিকা, এলাকার সাধারণ মানুষ, প্রশাসন সকলের সহযোগিতাতেই আমাদের বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। হীরকজয়ন্তী বর্ষ উদযাপনেও এলাকার অবদান অনেক। তাঁদের সহযোগিতাতেই একশো ফুটের জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, মাতঙ্গিনী, আম্বেদকরের মূর্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপশি স্কুলে মার্বেল পাথরের অশোক স্তম্ভ বসানো হয়েছে।

    স্কুলের অনুষ্ঠান মানে গ্রামেরই উৎসব। এ দিন প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে এলাকার সব মানুষের আমন্ত্রণ ছিল। দুপুরে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ খাওয়া–দাওয়া করেছেন। রোজা রাখার কারনে যারা দুপুরে আসতে পারেননি, তাঁদের জন্য রাতে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ জানা গিয়েছে, আজ, শুক্রবার রক্তদানের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে হীরকজয়ন্তী বর্ষের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে থাকার কথা এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শিউলি সাহা, ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী–সহ অনেকেরই।

    পড়াশোনা ছাড়াও জেলা তথা রাজ্যে গোলাড় সুশীলা বিদ্যাপীঠের পরিচিতি অন্য কারণে। এই বিদ্যাপীঠের কন্যাশ্রী ক্লাব একের পর এক বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করে সুনাম কুড়িয়েছে। বাল্য বিবাহ রোধ করে পুরস্কার পেয়েছে জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরে। স্কুলে ঢোকার মুখেই দেওয়ালে বড় বড় করে লেখা আছে, ‘আর কম বয়সে বিয়ে নয়।

    মেয়েদের ১৮ এবং ছেলেদের ২১ বছরের আগে বিয়ে নয়।’ এ রকম নানা সচেতনতা বার্তা রয়েছে স্কুলের এখানে ওখানে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও স্বীকার করছেন, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে এবং সচেতনতা প্রচারে গোলাড় সুশীলা বিদ্যালয়ের ভূমিকা খুব প্রশংসনীয়।

    এলাকার বাসিন্দা অশোক দোলই, রিনা দাস, মহম্মদ হাসান মল্লিকরা বলেন, ‘সত্যি, সকলকে নিয়ে কী ভাবে একতার অনুষ্ঠান করতে হয় তা করে দেখালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের অনুষ্ঠানে সকলে সহযগিতার হাত বাড়িয়েছেন। আমাদের স্কুল আমাদের গর্ব।’

  • Link to this news (এই সময়)