২০২২-এর ২১ মার্চ। বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে রোমহর্ষক ঘটনার স্মৃতি আজও দগদগে। তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের খুনের ঘটনার পরে গ্রামে একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মৃত্যু হয় ১০ জনের। মা, বোন, দিদি, স্ত্রী, মেয়ে, জামাই-সহ দশ জনকে হারান মিহিলাল শেখ। পরবর্তীতে যোগ দেন বিজেপিতে। সেই মিহিলাল শুক্রবার বগটুইয়ের ঘটনার তিন বছর পূর্তির শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে ক্ষমা চাইলেন তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
একদা তৃণমূল কর্মী মিহিলাল স্বজনদের হারিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ২০২৪-এর ডিসেম্বর মাসে রামপুরহাটের তৃণমূল কার্যালয়ে দেখা গিয়েছিল মিহিলালকে। অনুব্রত মণ্ডলের সামনে হাজির হয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার তৃণমূলের তরফে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানেও হাজির হন মিহিলাল।
আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে করজোরে ক্ষমা চেয়ে মিহিলাল বলেন, ‘সেই সময় আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেক কটূ কথা বলেছিলাম। ভুল করেছিলাম। আজ ক্ষমা চাইছি।’ ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপির উপরও। মিহিলালের কথায়, ‘শুভেন্দু অধিকারীরা প্রথম বছর আমাদের সঙ্গে ছিলেন। পাশের থাকার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে তাঁদের আর দেখা যায়নি।’
বগটুইয়ের ঘটনার পরের বছরেই তৃণমূল-বিজেপি উভয় দলের তরফেই শহিদ বেদি নির্মাণ করা হয়েছিল। স্থানীয়দের অনেকেরই দাবি, ঘটনার পর কিছুদিন বিজেপি নেতৃত্ব যাতায়াত করলেও পরবর্তীকালে তাঁদের আসতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে, সরকারের তরফে বগটুইয়ের ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের লোকজনকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বজনহারাদের পরিবারের অনেকেই পরবর্তীকালে তৃণমূলে যোগদান করেছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর আশীর্বাদে মিহিলাল এখনও প্রতি মাসে একটা টাকা পান। এছাড়াও একটি সিকিউরিটিও রয়েছে তাঁর সঙ্গে। তা হলে কী ভাবে শুভেন্দু অধিকারী পাশে থাকেননি? আজকে যাঁর জন্য বলছেন, ক্ষমা চাইছেন একটা সময় সেই লোকটাই পাশে ছিল না। এখন ওঁকে প্রশ্ন করতে কোন মন্ত্র বলে তিনি পাল্টে গেলেন?’