ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে পদক্ষেপ, লেনদেনে নয়া নিয়ম
হিন্দুস্তান টাইমস | ২২ মার্চ ২০২৫
রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আসতে শুরু করেছে নবান্নে। আর এই অভিযোগ ওঠে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। সেটা ঠেকাতেই নতুন অর্থবর্ষ থেকে এই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের আয়–ব্যয়ের উপর কড়া নজর রাখতে চলেছে নবান্ন। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে এখনও হাতে লেখা রসিদের উপর ভিত্তি করে লেনদেন চলে। যেখানে যুগ এগিয়ে গিয়েছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। এগুলি এবার সম্পূর্ণ বন্ধ করা হচ্ছে। পরিবর্তে চালু করা হচ্ছে নতুন পোর্টাল। আর ওই পোর্টালের মাধ্যমেই আর্থিক লেনদেন করা যাবে। সুতরাং রোজকার আয়–ব্যয়ের হিসেবে স্বচ্ছতা থাকবে। অনলাইনে নথিভুক্ত থাকবে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই নিয়ম চালু করতে চলেছে নবান্ন। তাই আনা হচ্ছে ‘সহজ–সরল’ পোর্টাল।
এই ‘সহজ–সরল’ পোর্টালের সঙ্গেই এবার খাপ খাইয়ে নিতে হবে। যাতে কোনও দুর্নীতি স্পর্শ করতে না পারে। হাতে লেখা রসিদের মাধ্যমে যে আয় তা চোখে দেখা যাচ্ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক টাকারই হিসাব মেলানো যেত না মাঝেমধ্যে। কোথায় টাকা যেত? এই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। আগে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে আর্থিক লেনদেনে গ্রাম পঞ্চায়েত ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পোর্টাল কাজ করত। জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ব্যবহার হতো ‘সরল’। এবার এই তিনটি স্তরেই একসঙ্গে ‘সহজ–সরল’ পোর্টাল ব্যবহার করা হবে। জেলাশাসকদের এই পোর্টাল ব্যবহার করতে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর বলে সূত্রের খবর।
এদিকে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই নানারকম লেনদেন হয়ে থাকে। সেটা নিজস্ব সম্পত্তি লিজ বা ভাড়া থেকে শুরু করে টেন্ডার সবেতেই লেনদেন হয়। তা থেকে সরকারের ঘরে রাজস্ব জমা হয়। কিন্তু এখানেই একটা ফাঁক ধরা পড়েছে। যার ফলে সঠিক পরিমাণ রাজস্ব আসছিল না বলে অভিযোগ। আবার পঞ্চায়েত স্তরে নানা খরচও হয় কাজের ক্ষেত্রে। কিন্তু কোন খাতে কত খরচ হচ্ছে সেটার হিসাবে গড়মিল থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই এবার থেকে তাঁরা ‘সহজ–সরল’ পোর্টালের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা রসিদ সকলে হাতে পাবেন। সুতরাং হাতে লেখা রসিদ এখন অতীত হতে চলেছে। আর এভাবেই আয়–ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা তৈরি হবে।
অন্যদিকে যে টাকা খরচ হচ্ছে এবং যে টাকা আয় হচ্ছে সেটা নথিভুক্ত হয়ে যাবে নয়া ‘সহজ–সরল’ পোর্টালে। সুতরাং কোথায় দুধ এবং কোথায় জল সবটা ধরা পড়ে যাবে। ন্যাশনাল অ্যাকাউন্ট কোডিফিকেশন অনুযায়ী এখন থেকে কোন খাতে কত খরচ করা যাবে সেটারও হিসাব বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে পঞ্চায়েতগুলির নিজস্ব আয়ের টাকা নির্দিষ্ট ক্ষেত্র ছাড়া খরচ করা যাবে না। অর্থাৎ একটি খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ করা যাবে না। অনলাইন ট্রেড লাইসেন্স, পঞ্চায়েত পর্যটন, বিল্ডিং প্ল্যান, টেন্ডার সবই যুক্ত করা হচ্ছে এই পোর্টালের সঙ্গে।