• স্বস্তির বৃষ্টি ‘কাল’ হয়ে নামল ধান চাষিদের জীবনে
    আজকাল | ২২ মার্চ ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: তীব্র গরমে গত কয়েকদিনে হাঁসফাঁস করছিলেন দক্ষিণবঙ্গবাসী। মার্চ মাসের শেষের দিকেই স্বস্তির বৃষ্টি ‘‌কাল’‌ হয়ে নামল ধান চাষীদের জীবনে। কারণ, বৃষ্টির সঙ্গে পড়েছে শিলা। মার্চ মাসের প্রায় শেষের দিক আর চৈত্রের মাঝামাঝি কালবৈশাখীর তাণ্ডব আর শিলাবৃষ্টির দাপটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ধান চাষে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন ১ এবং দাঁতন ২ ব্লকে শুক্রবার সন্ধে থেকে হঠাৎ করে দশ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ শিলাবৃষ্টি। মাঝে কিছুটা সময় বৃষ্টি বন্ধ হলেও, শুক্রবার সারারাত এবং শনিবার সকাল পর্যন্ত চলে প্রবল শিলাবৃষ্টি। যার জেরে বিঘার পর বিঘা জমির ধান নষ্ট। বিশাল ক্ষতির মুখে পড়ে মাথায় হাত ধান চাষীদের। সরকারি সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা।

     জানা গিয়েছে, দাঁতন দুই ব্লকের জেনকাপুর অঞ্চলের বামনদা, কাড়িয়া, আঙ্গুয়া অঞ্চলের পলশিয়া, মোহনপুরের চকইসমাইল, সাউটিয়া, নীলন্দা অঞ্চল সহ একাধিক গ্রামে ঝড়–সহ প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। সেই সঙ্গে চলে শিলাবৃষ্টি। প্রবল ঝড়ে একাধিক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ে। শিলাবৃষ্টির দাপটে জমিতেই নষ্ট হয়ে যায় সমস্ত পাকা ধান। শুধু পাকা ধানই নয়, কাঁচা ধান–সহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির মুখে কৃষকরা। তাঁরা জানান, বিঘা প্রতি জমিতে ধান চাষে খরচ প্রায় হাজার পাঁচেক টাকা। কেউ চড়া সুদে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় ধান চাষ করেছিলেন। যেটুকু ধান পড়ে রয়েছে, তা ঝাড়াই করতেই অনেক বেশি খরচ হয়ে যাবে। পাকা ধান তোলার ঠিক আগেই শিলাবৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ ক্ষতিগ্রন্থ চাষীদের। 

    প্রবীণ দে নামে এক কৃষক বলেন, ‘‌এইরকম শিলাবৃষ্টি আমি আগে কখনও দেখিনি। জমির সব ফসল নষ্ট করে দিল। ধারদেনা করে চাষ করেছিলাম। কী করে ঋণ শোধ করব বুঝতে পারছি না। আমরা চাই সরকার সাহায্য করুক।’‌ অন্যদিকে দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান জানিয়েছেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে এলাকায় প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১০০ শতাংশ ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে দাঁতন এলাকায়। যা পূরণ করা খুব মুশকিল। বিশেষ করে পান, ধান, বাদাম চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ জমি প্রবল বৃষ্টিতে ডুবে গিয়েছে।’‌ তাঁর কথায়, ডানা ঝড়ের সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বিমার মাধ্যমে কৃষকরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন। ইতিমধ্যে খড়গপুর মহকুমাশাসককে বিষয়টি পুরো জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। পুরো এলাকার দিকে নজর রাখছেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা।

     
  • Link to this news (আজকাল)