যাঁরা আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন এবং সুবিচারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।
সদ্য দার্জিলিংয়ে ট্রান্সফার করা হয়েছে আরজি আন্দোলনের সমর্থনে সামনের সারিতে থাকা, চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে। তারই প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ এই মন্তব্য করেন বলে টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় ফের একবার আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে রাজ্য সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'বাংলায় যে আইন-শৃঙ্খলার প্রকৃত অবস্থা ঠিক কেমন, আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাই সেটা সকলের সামনে প্রকাশ করে দিয়েছে। সেই কারণেই এই গোটা ঘটনা ধামাচাপা দিতে সরকার সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাঁরা সেই সময় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদের হয় ট্রান্সফার করে দেওয়া হচ্ছে, নয়তো ভয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু, আন্দোলন এখনও থামানো যায়নি।'
দিলীপ মনে করেন রাজ্য সরকার যত এই আন্দোলনকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে, আন্দোলন ততই আরও তীব্র হবে। তিনি বলেন, 'আন্দোলন ফের শুরু হচ্ছে। তাই যাঁরা সামনের সারিতে রয়েছেন, তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। যাতে মানুষ চুপ করে থাকে। সরকার যত চাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে, আন্দোলনের ঝাঁঝ ততই বাড়বে।'
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার ডা. সুবর্ণ গোস্বামীকে ট্রান্সফার করে দেয়। তাঁকে দার্জিলিং টিবি হাসপাতালের সুপারের পদে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর আগে ডা. গোস্বামী পূর্ব বর্ধমানের ডেপুটি সিএমওএইচ-২ পদে ছিলেন। আচমকাই এই সরকারি নির্দেশিকা জারি করে তাঁকে দার্জিলিংয়ে ট্রান্সফার করার বিষয়টি ঘোষণা করা হয়।
আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই সরব ছিলেন এই ডা. সুবর্ণ গোস্বামী। ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বারবার রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এমনকী, এই ঘটনায় নির্যাতিতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়েও একটি টিভি চ্যানেলকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তিনি।
সেই সাক্ষাৎকারে ময়নাতদন্তের তৎকালীন বা প্রাথমিক অনুসন্ধানগুলি বিশ্লেষণ করতে দেখা গিয়েছিল ডা. গোস্বামীকে। যার জেরে পরে তাঁর বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচার করার অভিযোগ ওঠে। এমনকী, তাঁকে কলকাতা পুলিশের সদর কার্যালয় লালবাজারেও ডেকে পাঠানো হয়।