• কোর কমিটির বৈঠক ‘ছেড়ে’ মহম্মদবাজারে অনুব্রত, কাজলকে এড়াতেই কি ডেউচায় কেষ্ট?
    এই সময় | ২৩ মার্চ ২০২৫
  • প্রায় তিন মাস পর বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক। অথচ সেই বৈঠকে থাকলেন না অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুরের জেলা কার্যালয়ে যখন তৃণমূলের কোর কমিটি বৈঠকে বসেছে, তখন মহম্মদবাজারে ব্লক অফিসে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন অনুব্রত। আর তা নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু কাজল-কেষ্টর বীরভূমে।

    এক সময় নানুরের দাপুটে নেতা ছিলেন কাজল শেখ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনুব্রতর উত্থানে আবছা হতে শুরু করেন কাজল। জেলার অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, কাজল-কেষ্টর সম্পর্কে মধুরতা অপেক্ষা অম্লভাবই বেশি। সেই অনুব্রত গ্রেপ্তার হওয়ার পর আবারও বীরভূমের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন কাজল। সংগঠনেও সমান ভাবে গুরুত্ব বাড়তে থাকে।

    লোকসভা ভোট থেকে পঞ্চায়েত ভোট, কাজল শেখেই ভরসা রেখে বীরভূমে ক্ষমতা কায়েম রেখেছে শাসকদল। কাজলও প্রমাণ করতে পেরেছেন, ‘আমিও পারি।’ তাই অনুব্রত বীরভূমে ফিরলেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এখন কেষ্টর সঙ্গে কাজলও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

    ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছিলেন, ‘কাউকে কিন্তু বাদ দেওয়া যাবে না কেষ্ট। কাজলকেও কনফিডেন্সে নিতে হবে। আশিসদা, শতাব্দীকেও মাঝে মধ্যে ডেকে নেবে। সবাই মিলে কাজ করবে।’

    দলনেত্রীর সেই মিটিংয়ের ঠিক এক মাস পর শনিবার বীরভূমের কোর কমিটি বৈঠক করে বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে। সেই বৈঠকে ছিলেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ, কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা। কিন্তু সেই বৈঠকে ছিলেন না কোর কমিটির চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল।

    কেন ছিলেন না? এ দিন কেষ্ট মণ্ডলের মহম্মদবাজারে বৈঠক ছিল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন কাজল শেখ। কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, ‘অনুব্রত মণ্ডল একটা বড় দায়িত্ব নিয়ে ডেউচাতে আছেন বলে জানিয়েছেন। এখানে অন্য কিছু ভাবার কোনও কারণ নেই।’ অন্যদিকে মহম্মদবাজারে ব্লক অফিসে প্রশাসনিক বৈঠক শেষে অনুব্রত মণ্ডলও বলেন, বিকাশদা কোর কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। দলের বৈঠক নিয়ম মেনে হচ্ছে। তবে এখানে জরুরি বৈঠকে আমাকে আসতে হয়েছে।’

    কিন্তু বিকাশ-অনুব্রতর বক্তব্যে একেবারেই সহমত নন কাজল শেখ। উল্টে তাঁর দাবি, ‘আহ্বায়ক কী হিসাবে বলছেন আমি জানি না। যে টুকু আমি জানি, আজ জেলায় ডেউচা পাচামি নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন ভবনে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেটা কলকাতার বেলেঘাটায়। এখানে ডেউচায় কোনও মিটিং নেই। ডেউচা নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে সবটা দেখা হচ্ছে, তারাই দেখবে। আমাদের তো এখানে ঢোকার কোনও প্রশ্নই নেই।’

    কিন্তু প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। কেষ্ট-কাজলের দড়ি টানাটানি কি থেকেই গেল? শীর্ষনেতাদের বার্তার পরও নিজেদের অবস্থানে কি অনড়ই থাকবেন কাজল-কেষ্ট?

  • Link to this news (এই সময়)