'আপনাদের মেয়েকে মেরে ফেলেছি', খুনের পর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ দিল স্বামী
আজকাল | ২৩ মার্চ ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দাম্পত্য কলহের জেরে মেয়ের সামনে শ্বাসরোধ করে খুন করা হলো মাকে। বৃহস্পতিবার নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার অন্তর্গত পাতেন্দ্রা গ্রামে। মৃত মহিলার নাম আনারকলি বিবি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে , আনারকলির সঙ্গে ১৭ বছর আগে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা মেহেরবান শেখ নামে এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। আনারকলি ও মেহেরবানের দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। আট বছর আগে মেহেরবান দ্বিতীয় বিয়ে করে। কিন্তু এক বছর আগে মেহেরবানের দ্বিতীয় স্ত্রী, তাকে ছেড়ে চলে যায়।
তবে কয়েক মাস আগে ফের দ্বিতীয় স্ত্রী ফিরে আসায় প্রথম স্ত্রী আনারকলির সঙ্গে মেহেরবানের দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। এমনকী আনারকলিকে মারধরও করত তার স্বামী। বৃহস্পতিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলার সময় এক মেয়ের চোখের সামনেই স্ত্রী আনারকলিকে শ্বাসরোধ করে মেহেরবান খুন করে বলে অভিযোগ। তারপর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ দেয় নিজেই।
মৃত ওই মহিলার দিদি ফেরদৌসী বিবি বলেন ,'আমার বোনের মেয়ে জানিয়েছে মেহেরবানই , আনারকলিকে খুন করেছে। আজ মেহেরবান আমাদের বাড়িতে এসে বলে সে আনারকলিকে 'খালাস' (খুন) করে দিয়েছে। কেউ তার কিছু করতে পারবে না। মেহেরবানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ছাড়াও একাধিক গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গত তিন দিন ধরে সে আমার বোনের উপর অত্যাচার করছিল। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর অশান্তির মধ্যে আমরা মাথা গলাতে যাইনি। '
আনারকলির বাবা মোস্তফা শেখ জানান, 'জামাই মেহেরবান শেখ আমাদের বাড়িতে এসে বলে আমার মেয়ে আনারকলি মারা গিয়েছে । তারপর আমরা সবাই মিলে মেহেরবানের বাড়িতে গিয়ে দেখি মেয়ে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দ্রুত আনারকলিকে নিকটবর্তী গোকর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে ডাক্তাররা আমার মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করে। আমার মেয়েকে তার স্বামী মেহেরবানই মেরেছে । আমার জামাই মেহেরবান শেখের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে । আমরা চাই আমার মেয়ের খুনি শাস্তি পাক।'
ইতিমধ্যেই কান্দি থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। আনারকলির পরিবারের তরফ থেকে তার স্বামী মেহেরবান শেখ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আনারকলির পরিবারের লোকেরা।