• 'গলা টিপে দেব', দিলীপের বাংলোয় যেচে গলা টেপাতে এল তৃণমূল...
    ২৪ ঘন্টা | ২৩ মার্চ ২০২৫
  • ই গোপী: "আমরা মার খেতে এসেছি!" দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বাংলোর সামনে সম্মুখ সমরে তৃণমূল (TMC)-বিজেপি (BJP); খবর পেয়েই পৌঁছলেন প্রাক্তন সাংসদ। শুক্রবারের ঘটনার পরই শনিবার সাত সকালে খড়্গপুরের (Kharagpur) শহরের বোগদাতে চা-চক্র থেকে মেদিনীপুরের (Midnapore) প্রাক্তন সংসদ তথা বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, "বেশি বেয়াদবি করলে, ছ্যাবলামি করলে...বাড়িতে ঢুকে মারব...চৌরাস্তায় টেনে এনে মারব!" পাল্টা তৃণমূলের প্রদীপ সরকার বলেন, "তৃণমূলও চুড়ি পরে বসে নেই!" 

    এরপরই শনিবার দুপুর নাগাদ দিলীপ ঘোষের বাংলোর সামনে উপস্থিত হন তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবাশীষ চৌধুরীর নেতৃত্বে ছ-সাত জন কাউন্সিলর সহ তেমন নেতাকর্মীরা দিলীপ ঘোষের বাংলার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অন্যদিকে, বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক সমিত মণ্ডলের নেতৃত্বে বিজেপির বেশ কিছু নেতাকর্মীও পৌঁছে যান সেখানে। ফলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় শনিবার দুপুরের। যদিও, দিলীপ ঘোষ বাংলো ছাড়েন অনেক আগেই। এনিয়ে তৃণমূল নেতা দেবাশীষ চৌধুরীর হুঁশিয়ারি, "দিলীপবাবু আমাদের মারবেন বলেছিলেন। আমরা মার খেতে এসেছি। দেখি ওনার কত দম। উনি যদি বাপের ব্যাটা হতেন, তাহলে আজ খড়্গপুর শহরেই থাকতেন। পালিয়ে যেতেন না!" 

    মহিলাদের অশ্লীল কথাবার্তা বলা এবং হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্য দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে পুলিশকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করার আহ্বানও জানিয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা দেবাশীষ চৌধুরী। দেবাশীষ চৌধুরী এই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়ে দুপুর দুটো নাগাদ দিলীপ ঘোষের বাংলোর সামনে থেকে চলে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরই পৌঁছে যান দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "দিলীপ ঘোষ এত সহজে জায়গা ছাড়েনা! গায়ের জোরে রাজনীতি করতে চাইলে, দিলীপ ঘোষ রাজি। ওদের হয়তো পুলিশ চলে যেতে বলেছে। যাক সদবুদ্ধি হয়েছে! কিন্তু এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে।" 

    তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "রাস্তার একজন বখাটে ছেলের থেকেও কদর্য ভাষা ব্যবহার করেন দিলীপ ঘোষ। এখন রাজ্য সভাপতি হওয়ার দৌড়ে আসার জন্যই তিনি এই সমস্ত করে বেড়াচ্ছেন। মহিলাদের অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করছেন। তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে আমাদের লজ্জা লাগে!"

    প্রদীপ সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বাংলো ছাড়লেন দিলীপ ঘোষ। তৃণমূলের বিক্ষোভের খবর শুনে বেলা আড়াইটা নাগাদ খড়্গপুর শহরে, নিজের বাংলোতে পৌঁছন দিলীপ ঘোষ। ততক্ষণে অবশ্য বাংলা ছেড়ে চলে গিয়েছেন তৃণমূল নেতা দেবাশীষ চৌধুরী (মুনমুন) সহ বিক্ষোভকারী তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ নিজের বাংলো ছাড়ার আগে তৃণমূলের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে যান দিলীপ। সকালে প্রদীপ জানিয়েছিলেন, "দিলীপ ঘোষ যদি এই ধরনের আচরণ করেন তাঁর খড়্গপুর শহরে ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে।" পাল্টা দিলীপ বলেন, "প্রদীপ সরকারের যদি দম থাকত, নিজে আসতে পারত। কেন মুনমুনকে পাঠিয়ে দিয়েছিল? দিলীপ ঘোষ চোখে চোখ রেখে রাজনীতি করে। প্রদীপের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে আমি চা-চক্র করব, মহিলাদের নিয়ে সভা করব। দিলীপ ঘোষের জন্যই খড়্গপুরে মাফিয়া-রাজ শেষ হয়েছে। আর তুমি মাফিয়াদের কোলে বসিয়ে রাজনীতি করো। দিলীপ ঘোষ আগুনের উপর দিয়ে হেঁটে এসেছে। দিলীপ ঘোষের সামনে আসার চেষ্টা করো না। শেষ হয়ে যাবে ভাই!"

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)