• রাজ শহরে নতুন অতিথি হয়ে আসছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার
    এই সময় | ২৩ মার্চ ২০২৫
  • রূপক মজুমদার, বর্ধমান

    সুন্দরবনের ‘মহারাজ’ আসছে বর্ধমানে। সবকিছু ঠিক মতো চললে এই বছরের স্বাধীনতা দিবসের আগে রমনাবাগানের জ়ুলজিক্যাল পার্কের আকর্ষণ হতে চলেছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সঙ্গী হিসেবে আসছে একটি জলহস্তীও এবং কয়েকটি প্রজাতির পাখিও।

    সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েছে রমনাবাগান কর্তৃপক্ষকে। শুধু তাই নয়, নতুন দুই অতিথি কোন জায়গায় থাকবে, সেটিও খতিয়ে দেখে গিয়েছেন বনাধিকারিকরা। আলিপুর চিড়িয়াখানা ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলায় নেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।

    ফলে এটি একটি বড় আকর্ষণ হতে চলেছে। তা ছাড়াও আলিপুর চিড়িয়াখানার পরে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে রমনাবাগানই হতে চলেছে প্রথম সেই চিড়িয়াখানা, যেখানে দেখা যাবে জলহস্তী।

    জেলা বনাধিকারিক সঞ্চিতা শর্মার বক্তব্য, ‘সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটি অফ ইন্ডিয়া থেকে আমাদের কাছে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তার জবাবে আমরা কয়েকটি বন্যপ্রাণীর সঙ্গে কয়েকটি বিশেষ প্রজাতির পাখি আনার কথা জানিয়েছিলাম। মৌখিক ভাবে সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটি একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং একটি জলহস্তী পাঠাবে বলে জানিয়েছে। সঙ্গে থাকবে কয়েকটি প্রজাতির পাখিও।’

    তিনি আরও বলেন, ‘চলতি মাসের শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠি পাঠানোর কথা রয়েছে। সব কিছু ঠিক মতো চললে জুলাই মাসের শেষে অথবা অগস্ট মাসের শুরুতে এই দুই নতুন অতিথি আসতে চলেছে রমনাবাগান চিড়িয়াখানায়।’ সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটির চিঠি পাওয়ার পরে ওই এনক্লোজ়ারগুলো তৈরির কাজে হাত দেওয়া হবে।

    বাবুরবাগ মৌজার গোলাপবাগে সাড়ে ১৪ হেক্টর জমিতে ১৯৭৮ সালে গড়ে উঠেছিল রমনাবাগান চিড়িয়াখানা। শুরুতে শাল, সেগুন, জাম, বট, শিরিষ সমেত নানা গাছে ভর্তি ছিল এই অঞ্চল। একটা সময়ে এখানে শুধুমাত্র চিতল হরিণ রাখা হতো। সে সময়ে অনেকে এই জায়গাকে ‘ডিয়ার পার্ক’ বলতেন। পরে এই জায়গাটি কেন্দ্রীয় জ়ু অথরিটির আওতায় আসা পর্যায়ক্রমে তৈরি হয় ‘মিনি জ়ু’।

    নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ অবধি গড়ে সাড়ে চার থেকে পাঁচশো দর্শনার্থী এখানে আসেন। বাকি সময়ে দর্শনার্থীদের গড় এক থেকে দেড়শো। প্রবেশ মূল্য ২৫ টাকা তবে তিন থেকে আট বছর অবধি টিকিটের দাম ১০ টাকা। রমনাবাগান মিনি জ়ু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে প্রায় ৮-১০ বছর আগে।

    এখানকার কাঞ্চননগর দীননাথ দাস উচ্চবিদ্যালয়ের প্রকৃতিপাঠের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক অনুপকুমার দত্ত বলছিলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রমনাবাগানে কিছু নতুন পশুপাখি আনা হয়েছিল, যা সাধারণ মানুষের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছিল। চিতা, কুমির, পাখি, কচ্ছপ ছোটদের কাছে বরাবরের প্রিয়। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং জলহস্তী এলে ভিড় আরও বাড়বে।’ প্রধান শিক্ষক সুভাষচন্দ্র দত্ত বলেন, ‘র‍য়্যাল বেঙ্গল টাইগার আর জলহস্তি এলে ছাত্রছাত্রী ছাড়াও বয়স্ক মানুষরাও এখানে আসবেন। পড়াশোনার সঙ্গে প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণী সম্পর্কেও সচতেন হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। সকলকে তা জানতে হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)