রূপম ইসলামের গানের লাইন ধার করে কেউ লিখছেন, ‘আজ নীল রঙে মিশে গেছে লাল...।’ কারও কটাক্ষ, ‘নীল-সাদাকেই কি তবে আপন করে নিল বাংলার লাল পার্টি?’ CPIM West Bengal-এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ডিপি বদল হতেই নানাবিধ কমেন্টে উপচে পড়েছে কমেন্ট বক্স। চিরাচরিত লাল কাস্তে-হাতুড়ির আচমকাই বদলে গেল কেন? প্রশ্ন তুলে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। উৎসুক নেটিজ়েনদের প্রশ্ন, কেন বদল হলো ডিপি?
নীল-সাদা আকাশ, সাদা মেঘের ভেলার উপর সোনালি রঙের কাস্তে-হাতুড়ি। নতুন ডিপি-তে এই ছবিই দেখা যাচ্ছে CPIM-এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে। কভার পিকচারও বদল হয়েছে। সেখানেও নীল-সাদা আকাশ, কাস্তে-হাতুড়ি উঁচিয়ে শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণির দুই প্রতিনিধি এবং একটি তারে ঝোলানো লাল পতাকার পাশেই বসে পাখি। সঙ্গে লেখা ‘ব্রিগেড চলো। ২০ এপ্রিল, বিকেল ৩টে।’ এই ডিপি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই হইচই পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অনেকে ভেবেছেন হ্যাক হয়ে গিয়েছে CPIM-এর ফেসবুক পেজ। কেউ লিখেছেন, ‘মহাশূন্যে বিলীন হওয়ার সময় হয়ে এসেছে।’ কারও কটাক্ষ, ‘জোট সঙ্গীর নীল-সাদার সঙ্গে ভালোই মানাচ্ছে।’ ‘লাল রংটা কি নিজেরাই মুছে ফেললেন?’ ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের নীল-সাদায় অনুপ্রাণিত CPIM।’ এমন কমেন্টও পড়েছে ডিপি-তে।
অনেকে আবার বলছেন, ‘লাল রং ছাড়া এই চিহ্ন প্রাণহীন লাগে।’ কারও মতে, ‘মানবতা ও প্রগতির প্রতীক। তাই নীল আকাশ জুড়ে সোনালি আভা।’
দলের ডিজিটাল বিভাগ থেকেই সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়ায় যাবতীয় পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। সেই বিভাগেরই এক সদস্যের বক্তব্য, ‘আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেডের কথা মাথায় রেখেই ডিজ়াইনাররা এই নতুন ডিপি ডিজ়াইন করেছেন। মুক্ত আকাশ, মুক্ত ও প্রগতিশীল চিন্তাভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে এই ডিপি-তে। তবে এটা কোনও নতুন বিষয় নয়। একাধিকবার ডিপি বদল হয় এই পেজের। বিভিন্ন ইভেন্টের কথা মাথায় রেখেই ডিপি ডিজ়াইন করা হয়।’ দলীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শীঘ্রই ফের পরিবর্তন করা হবে ফেসবুক পেজের ডিপি। ২০ এপ্রিল ব্রিগেডের আগেও আরও দু-তিন বার দু-তিন রকমের ডিপি প্রকাশ্যে আসবে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেড অভিযানের ডাক দিয়েছে CPIM। সেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জনজোয়ার আনতে এখন থেকেই শুরু হয়েছে প্রচার। সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার বরাবরই বামেদের অন্যতম হাতিয়ার। সেই লক্ষ্যেই নানাবিধ পোস্টার, ডিজিটার ছবি ডিজ়াইন করা হচ্ছে বলে খবর।
এই ডিপি বদল নিয়ে সংবাদমাধ্যমে তৃণমূল নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘এত দিন ওরা নীল-সাদা নিয়ে কটাক্ষ করত। আজকে নিজেরাই ওই রং করেছে। আসলে ওরা ওদের রক্তাক্ত ইতিহাস ভুলতে এই রং বদল করেছে। লাল সরিয়ে দিয়েছে।’ পাল্টা আবার মহম্মদ সেলিম সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘তৃণমূলের বক্তব্যে মনে হচ্ছে ওরা নীলের উপর যে মৌরসিপাট্টা কায়েম করেছে তাতে আবার নীল কর চালু করবে।’