• জল চুরি ঠেকাতে কমিটি গঠন শিলিগুড়িতে
    এই সময় | ২৩ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: রাত বাড়লেই চুরি বাড়ছে। তবে গেরস্তের ঘরে নয়, শিলিগুড়ি শহর জুড়ে পানীয় জল চুরি চলছে! জল তোলার পোর্টেবল পাম্প নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন কিছু মানুষ। রাস্তার পাশে মাটির তলায় পেতে রাখা পুরসভার পাইপ থেকে জল বার করে বাড়ির ছাদে বসানো ট্যাঙ্কে জল তোলা হচ্ছে বলে ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠছে।

    যার ফলে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল পাচ্ছেন না মানুষ। এমনিতেই শিলিগুড়ির পানীয় জল প্রকল্প প্রায় পঁচিশ বছরের পুরোনো। সেটাও শহরের স্বল্প সংখ্যক মানুষের প্রয়োজনের কথা ভেবে তৈরি হয়েছিল। পরে জনসংখ্যা বাড়ায় ৫১১ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

    ডিপ টিউবওয়েল বসিয়ে পানীয় জলের প্রাথমিক সঙ্কট মেটানোর চেষ্টা চলছে। সেই পথেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই জল চুরি। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব ইতিমধ্যেই জল চুরি ঠেকাতে একটি কমিটি গড়েছেন।

    পুরসভা সূত্রের খবর, ওই কমিটিকে বলা হয়েছে, শহরের কোথায়, কারা পাম্প বসিয়ে জল চুরি করছে, তা চিহ্নিত করতে হবে। ধরা পড়লে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও ওই কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকী, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কিংবা ভবন থেকে পুরসভার পানীয় জলের সংযোগও পাকাপাকি ভাবে কেটে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়র বলেন, ‘এ ভাবে পুরসভার জল চুরি করে নেওয়াটা গর্হিত অপরাধ। এই ধরনের অপরাধীদের কোনও ভাবেই ক্ষমা করা যায় না।

    জল চুরি ঠেকাতে যে কমিটি গড়া হয়েছে, তাঁদের বলা হয়েছে, কঠোর হাতে এই ধরনের অপরাধ দমন করতে হবে।প্রয়োজনে পাকাপাকি ভাবে পানীয় জলের সংযোগ কেটে দেওয়া হবে।’ শনিবার শিলিগুড়ি পুরসভার সাপ্তাহিক কর্মসূচি ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মসূচিতে শহরের বাসিন্দারা সকাল ১১টা থেকে টানা এক ঘণ্টা শহরের মেয়রের সঙ্গে নিজেদের নাগরিক সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পারেন। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে মেয়র আধিকারিকদের সমাধানের নির্দেশ দেন।

    কখনও মেয়র নিজেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। এমনকী, অভিযোগকারীকে নথিপত্র–সহ পুরসভায় ডেকেও সমস্যা মেটানোর উদাহরণ রয়েছে। এ দিন ওই অনুষ্ঠানে শহরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা মেয়রের কাছে জল চুরির ব্যাপারে অভিযোগ জানান।

    ওই ওয়ার্ডে রাত বাড়লেই কিছু লোক পাম্প বসিয়ে জল চুরি করছে বলে অভিযোগ জানান তিনি। মেয়র বলেন, ‘পুরোনো প্রকল্পে শহরের ৪৪ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছয়। নতুন প্রকল্প তৈরি হয়ে গেলে শহরের ৯০ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছবে। পানীয় জল এখন মূল্যবান।

    যে কেউ, সামান্য প্রয়োজনে এ ভাবে জল চুরি করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।’ নতুন প্রকল্প চালু হলেও শহরে জলের অপচয় কমাতে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। তার মধ্যে শহরের নিকাশি নালার জল পরিশোধন করে গাড়ি ধোয়া, ফুল চাষ–সহ নানা কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা হচ্ছে।

  • Link to this news (এই সময়)