এই সময়, বারুইপুর: শিশু এবং প্রসূতি মৃত্যু ঠেকাতে গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালমুখী করে তুলতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। বাড়ি থেকে হাসপাতালে যাওয়া–আসার জন্য চালু হয়েছে মাতৃযান পরিষেবা। হাসপাতালে সন্তান প্রসব করলে জননী সুরক্ষা যোজনায় নগদ অর্থ প্রাপ্তির পাশাপাশি বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কিন্তু তার পরেও বাড়িতে সন্তান প্রসব পুরোপুরি আটকানো যাচ্ছে না।বাড়িতে সন্তান প্রসবের বিরোধিতা করতে গিয়ে এবার আক্রান্ত হলেন এক আশাকর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর থানার নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের হিমচি গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত আশাকর্মীর নাম রোজিনা বিবি। তিনি হিমচি গ্রামে একটি সাব–সেন্টারে কাজ করেন। এলাকার গর্ভবতী মহিলাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া, নানা ভাবে মহিলাদের সাহায্য করে থাকেন তিনি। এলাকার কোনও মহিলা যাতে বাড়িতে সন্তান প্রসব না করেন তার জন্য মানুষকে সচেতন করেন। কিন্তু তাঁর আবেদন উপেক্ষা করে স্থানীয় এক মহিলা হাসপাতালে না গিয়ে নিজের বাড়িতেই সন্তান প্রসব করেন।
সেটা জানার পর রোজিনা বিবি তার প্রতিবাদ করেছিলেন। তারই জেরে আক্রান্ত হতে হয়েছে তাঁকে। শুক্রবার এক গর্ভবতী মহিলাকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে এলাকায় ফেরেন। তার পর আরও একজন গর্ভবতী মায়ের খোঁজ খবর নিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে আচমকাই সেরুন মণ্ডল ও তাঁর স্বামী নুরাইন মণ্ডল তাঁর উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেয়। সেই সঙ্গে নগদ পাঁচ হাজার টাকা এবং ব্যাগে থাকা বেশ কিছু কাগজপত্র পুকুরের জলে ফেলে দেয়। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন বাড়ির সামনে হাজির হতেই দু'জনেই চম্পট দেয়।
পরে আক্রান্ত আশাকর্মীকে প্রথমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বারুইপুর মহকুম হাসপাতাল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর বারুইপুর থানাতে গিয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ জানান।এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বারুইপুর ব্লকের অন্যান্য আশাকর্মীরা একত্রিত হয়ে বারইপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায়। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সরব হন তাঁরা।
রোজিনা বিবি বলেন, 'কর্তব্যরত অবস্থায় আমাকে মারধর করা হয়েছে। বারুইপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু হামলাকারীদেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। এই ভাবে যদি আশাকর্মীদেরকে মারধর করা হয় তাহলে আমাদের মনোবল ভেঙে যাবে। এলাকায় কেউ কাজ করতে পারবে না।'
আর এক আশাকর্মী রফিউন্নেশা খাতুন বলেন, 'আমাদের একটাই দাবি আশাকর্মীকে মারধরের ঘটনায় যারা যুক্ত তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।' বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কানন দাস বলেন, 'আশাকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।'