• স্রেফ মাছ ধরার জালেই উঠল ১৬২ কিলো আবর্জনা! ২ ঘণ্টায় স্বচ্ছ হল কলকাতার গঙ্গা-ঘাট
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৩ মার্চ ২০২৫
  • স্রেফ মাছ ধরার জাল 'হাতিয়ার' করে গঙ্গা সাফাই অভিযানে নামা হয়েছিল। আর সেই অভিযানের মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই 'পুণ্যতোয়া' এই নদীবক্ষ থেকে তুলে ফেলা হল ১৬২ কিলোগ্রাম বর্জ্য ও আবর্জনা!

    টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্ব জল দিবস উপলক্ষে এই বিশেষ সাফাই অভিযানের আয়োজন করা হয়। যার নেপথ্যে যৌথভাবে ছিল - সি এক্সপ্লোরার্স ইনস্টিটিউট ।

    সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনুসারে, এই সাফাই অভিযানে ১০০ বর্গমিটার আয়তনের একটি মাছ ধরার জাল বা ফিশিং নেট ব্যবহার করা হয়। অভিযানের প্রথম ধাপ হিসাবে কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয় 'সুন্দরী ঘাট'কে। ২ ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে গঙ্গার বুকে জমে থাকা আবর্জনা সাফ করার প্রক্রিয়া। ২ ঘণ্টা পর দেখা যায় নদীবক্ষ থেকে জালে ছেঁকে তোলা আবর্জনার পরিমাণ ১৬২ কিলোগ্রাম!

    জানা গিয়েছে, গঙ্গা থেকে আবর্জনা নিষ্কাশনের এই প্রক্রিয়ায় নৌকার মাঝি, জেলে, স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাফাইকর্মীদেরও সাহায্য নেওয়া হয়। উল্লেখ্য, এই সাহায্যকারীদের মধ্যে সকলেরই রুজিরুটি সম্পূর্ণভাবে গঙ্গা নদীর উপরেই নির্ভরশীল।

    এই ২ ঘণ্টার অভিযানে গঙ্গার বুক থেকে মানুষের ব্যবহার করা ও ফেলে দেওয়া যে বিপুল পরিমাণ আবর্জনা ছেঁকে তোলা হয়েছে, তার মধ্য়ে রয়েছে - প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের ছেঁড়া ব্যাগ, পলিস্টিরেন, রবারের তৈরি চপ্পল, ডিসপোজেবল কন্টেনার, এমনকী অবৈধ মাদক!

    আরও দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, সাফাই অভিযাত্রীদের জালে উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রজাতির মরা মাছ ও চিংড়ি। তথ্যাভিজ্ঞরা মনে করছেন, মানুষের ফেলা আবর্জনা থেকে সৃষ্ট বা নিঃসৃত রাসায়নিকের প্রভাবেই ওই মাছ ও চিংড়ির মৃত্যু হয়েছে।

    প্রাথমিক পর্বের এই সাফাই অভিযান শেষ হওয়ার পরই এই কাজের পরিসীমা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসইআই। তারা ঠিক করেছে কলকাতার ২০টি ঘাট ও তার আশপাশের নদীবক্ষ এভাবেই পরিষ্কার করা হবে।

    সংস্থার মহাসচিব সুদেষ্ণা চট্টোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, 'আমাদের প্রাথমিক অভিযানেই এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে কত সহজেই এবং কম খরচে গঙ্গাবক্ষ পরিষ্কার করা সম্ভব। এবার আমরা এই প্রক্রিয়া কলকাতার ঘাটগুলি ধরে ধরে আরও বিস্তৃতভাবে করতে চাই। আমরা যাতে এই উদ্যোগ চালিয়ে যেতে পারি, তার জন্য সিএসআর তহবিলের সাহায্য চাইছি।'

    এই অভিযানের সাক্ষী থাকতে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্য়ান কল্যাণ রুদ্রকে। তিনি বলেন, 'এই নদীই পানীয় জলের একমাত্র এবং বৃহত্তম উৎস। তাছাড়াও, যোগাযোগব্যবস্থা, কৃষিকাজ, মৎস্যচাষ এবং শিল্পের ক্ষেত্রে এই নদীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নদী আমাদের জীবনরেখা। এই নদী যাতে আর বেশি দূষিত না হয়, সেটা নিশ্চিত করার এটাই সেরা সময়।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)