আবাসের টাকা পেয়েও ঘর নির্মাণ করাতে পারছেন না আদিবাসী পরিবার। কারণ বন দপ্তরের জায়গায় বসবাস করছেন তাঁরা। গত ১৫-১৬ বছর ধরে ওই জায়গায় বসবাস করলেও, এখনও তাঁদের হাতে পাট্টা তুলে দেওয়া হয়নি। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর। অবশেষে পরিবারগুলির জন্য সাহায্যের হাত বাড়াল জেলা প্রশাসন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রসিয়াড়ী গ্রামে রয়েছে ১১টি আদিবাসী পরিবার। গত ১৫-১৬ বছর ধরে ওই জায়গায় বসবাস করলেও, এখনও তাঁদের হাতে পাট্টা তুলে দেওয়া হয়নি বলে দাবি। এ দিকে, পাকা বাড়ি না থাকায় আবাসের বাড়ি পাওয়ার জন্য তাঁদের উপযুক্ত বিবেচনা করেছিলেন সমীক্ষকরা। ১১টি আদিবাসী পরিবারের মধ্যে ৬টি পরিবার আবাসের প্রথম কিস্তির টাকাও পেয়ে গিয়েছেন। ডিসেম্বর মাসেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ৬০ হাজার টাকা।
তবে, প্রায় ৩ মাস হয়ে গেলেও সেই টাকা তাঁরা তুলতে পারছেন না। বাড়িও তৈরি করতেও পারছেন না! পারবেন কি করে? প্রশাসনের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী, তাঁদের তো নিজস্ব জায়গাই নেই! পাননি পাট্টা। প্রশাসনের তরফে তাই তাঁদের ওই টাকা (৬০ হাজার) অ্যাকাউন্টে ‘হোল্ড’ করে রাখা হয়েছে বলে রবিবার জানিয়েছেন বিডিও উৎপল পাইক। এদিকে, ঘর না করতে পেরে অসহায় অবস্থা ঝর্ণা সোরেন, সনাতন মুর্মু, দুঃখীরাম হেমব্রমদের।
রসিয়াড়ী গ্রামের অসহায় ওই ১১টি আদিবাসী পরিবার হাতির তাণ্ডব-সহ নানা আতঙ্ককে সঙ্গী করেই বছরের পর বছর ধরে ভাঙাচোরা মাটির বাড়িতে বসবাস করছেন। তাঁদের মধ্যে ৬টি পরিবারের নাম এ বারের আবাস তালিকায় উঠেছে। ৬০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট হওয়ার পর আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন সকলেই। সনাতন মুর্মু বলেন, ‘এখন আমাদের দিদি, মুখ্যমন্ত্রীই ভরসা! যদি আমরা বাড়ি তৈরি করতে পারি, দিদিকে কোটি কোটি প্রণাম জানাবো। আর না হলে এরকমভাবেই আমাদের দিন কাটবে। কী আর করব?’
বিডিও উৎপল পাইক সকলকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, ‘বন দপ্তরকে সঙ্গে নিয়ে আমরা একটি বৈঠক করেছি। ইতিমধ্যেই আমরা মহকুমা স্তরে তাঁদের পাট্টার আবেদন পাঠিয়েছি। সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে জেলাস্তরে পৌঁছলেই বন দপ্তরের পাট্টা পেয়ে যাবেন।’ মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। ওঁরা যাতে দ্রুত পাট্টা পান, নিশ্চয়ই সেই উদ্যোগ নেব।’