• শহরে গাঁজার কারবার চলছে রমরমিয়ে, আসক্ত স্কুলছাত্ররা
    এই সময় | ২৪ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, দুর্গাপুর: পাচার করার আগে কখনও আসানসোল, আবার কখনও দুর্গাপুর থেকে গাঁজা বাজেয়াপ্ত করছে পুলিশ। সম্প্রতি ডুবুরডিহি চেকপোস্ট থেকে এক কুইন্টাল গাঁজা সমেত পাঁচ মহিলা–সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১০ কেজি গাঁজা নিয়ে বরাকরের দিকে যাওয়ার পথে এক কিশোরী–সহ গ্রেপ্তার করা হয় তিন জন পাচারকারীকে। অথচ দুর্গাপুর শহরেই কয়েকশো কেজি গাঁজা মজুত করে দিনের পর দিন চলছে অবৈধ কারবার।

    কোক-ওভেন থানার সিনেমা হল রোডে জ্যোতি বসুর মূর্তির পাশে একটি দোকান থেকে বিক্রি হচ্ছে গাঁজা। সংলগ্ন গোডাউনে মজুত করে রাখা গাঁজা সরবরাহ করা হচ্ছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়।

    এমনকী স্কুলছাত্ররা এই দোকান থেকে গাঁজা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই গাঁজার কারবারের পিছনে এক শ্রেণির পুলিশকর্মীর মদত রয়েছে। বিষয়টি জানানো হলে দুর্গাপুরের এসিপি সুবীর রায় বলেন, ‘সিনেমা হল রোডে কোন জায়গায় গাঁজা বিক্রি হচ্ছে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

    তবে ছাত্রদের গাঁজার নেশায় আসক্ত হওয়ার ঘটনা নতুন নয় দুর্গাপুরে। গাঁজার নেশায় ছাত্রদের বুঁদ হয়ে থাকার বিষয়টি কয়েক মাস আগে স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষকদের নজরে আসে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক খোঁজখবর করে জানতে পারেন, সিনেমা হল রোডে জ্যোতি বসুর মূর্তির পাশে একটি দোকান থেকে নিয়মিত গাঁজা কিনে নেশা করছে কিছু ছেলে।

    সে সময়ে ছাত্রদের গাঁজা বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু সে কথায় গাঁজা বিক্রেতা কান না–দেওয়ায় কোক-ওভেন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রধান শিক্ষক। এর পর গাঁজা বিক্রেতার দোকানে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে দোকান থেকে গাঁজা বাজেয়াপ্ত করা যায়নি। কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয় গাঁজার কারবার। ওই দোকানদার জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের রমরমিয়ে গাঁজার কারবার শুরু করে।

    গাঁজা কারবারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা সেই প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘খবর পেয়েছি ফের ছাত্রদের কাছে গাঁজা বিক্রি করা হচ্ছে। এই নেশার কারবার বন্ধ করতে আবার থানায় যাব।’ স্থানীয় এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘স্কুল পড়ুয়াদের কাছে গাঁজা বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু ওই গাঁজা ব্যবসায়ী কোনও কথা শুনছে না। টাকার লোভে সিগারেটের মশলার সঙ্গে গাঁজা মিশিয়ে স্কুলের ছাত্রদের বিক্রি করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ সব জানে। তা সত্ত্বেও গাঁজা বিক্রি বন্ধ করছে না।’

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গাঁজা বিক্রেতার কাছে একাধিক যুবক কাজ করে। এই যুবকরা অর্ডার অনুযায়ী শহরের বিভিন্ন জায়গায় গাঁজা সরবরাহ করে। এলাকাটি দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘সিনেমা হল রোডে গাঁজা মজুত করে বিক্রি করার ঘটনা আমার জানা ছিল না। ছাত্রদের গাঁজা বিক্রি করা ভয়ানক অপরাধ। ওই গাঁজা বিক্রেতার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করব।’

  • Link to this news (এই সময়)