সুপ্রকাশ চক্রবর্তী ■ হাওড়া
হাওড়ার বেলগাছিয়া মোড় থেকে কেএমডিএ–র তৈরি বিকল্প পাইপলাইনের মাধ্যমে রবিবার সন্ধে থেকে পানীয় জল সরবরাহ শুরু হলো উত্তর হাওড়ায়। তবে বেলগাছিয়া ভাগাড় এলাকায় এ দিন পুনরায় কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। সব থেকে খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছে ভাগাড়ের পাশ দিয়ে যাওয়া নিকাশি নালার। ভাগাড়ের ধসে বুজে গিয়েছে বেলগাছিয়া পচাখাল। এর ফলে সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ জলনিকাশি ব্যবস্থা। বর্ষায় ফের জলে ভাসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে হাওড়ায়।
অন্য দিকে, বামুনগাছি এলাকায় নোংরা জল জমতে শুরু করেছে। এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে আসেন ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট (এয়ার অ্যান্ড ওয়াটার)–এর বিশেষজ্ঞ কমিটির তিন সদস্য। কমিটির সভাপতি সাধনকুমার ঘোষ বলেন, ‘মিথেন গ্যাস ভাগাড়ে এমন ভাবে জ্বলছে যে, আরও বড় আকারের বিপদ ঘটে যেতে পারে। তাই এখনই বেলগাছিয়া ভাগাড়ের আশপাশের মানুষদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার, এবং এক কিলোমিটারের মধ্যে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ করা দরকার।’
যদিও এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, তিনটি পাহাড়ের মধ্যে এফ রোডের দিকে যে পাহাড়টি আগেই কেটে জঞ্জাল সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এখন সেখানে নতুন করে জঞ্জাল ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চার সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ টিম। তার আগে ঘটনাস্থলে আসেন বিজেপি নেতা রুদ্রনীল। তিনি রাজ্য সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, জাপানি সংস্থা এনে জঞ্জাল সমস্যার সমাধান করবেন। এই তার নমুনা!’
বিকেলে বামেরা ভাগাড় এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করেন। তাঁরা ভাগাড়ের মানুষদের দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি জানান। বেলগাছিয়া ভাগাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে জেলাশাসকের অফিসে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বিশেষজ্ঞ, হাওড়া পুরসভা এবং কেএমডিএ–র ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিকরা, জেলাশাসক, হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। বৈঠকে ঠিক হয়, সোমবার থেকে বেলগাছিয়া ভাগাড়ের মাটির পরীক্ষা করা হবে।
কী কারণে ভাগাড়ের আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাট এবং বাড়িতে ফাটল ধরেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রাথমিক ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে, বায়োমাইনিং–এর মাধ্যমে বিপজ্জনক জঞ্জালের পাহাড়ের উচ্চতা কমানো। দু’টি জঞ্জালের পাহাড় প্রায় ৫০ মিটার বেশি হয়ে যাওয়ায় মাটিতে চাপ বেড়ে যায়। একইসঙ্গে জঞ্জাল থেকে মিথেন গ্যাস নির্গমণের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।