২০২৪ সালে নেটফ্লিক্স ওটিটি প্ল্যটফর্মে মুক্তি পাওয়া ‘মামলা লিগাল হ্যায়’ ওয়েব সিরিজ়ের সেই দৃশ্যটা মনে আছে? বাঁদরের অত্যাচারে কাজ-কর্ম বন্ধ রেখে বিক্ষোভে নেমেছিলেন আইনজীবীরা। তার পর কুকুরকে বাঘ সাজানো থেকে শুরু করে আরও হাজার একটা লঙ্কাকাণ্ড।
এ বার সেই রিল দৃশ্যের সঙ্গে রিয়েলের অদ্ভূত মিল? হনুমানের তাণ্ডবে নাজেহাল সিউড়ির তিলপাড়ার বাসিন্দারা। সোমবার ডিউটি করতে গিয়ে হনুমানের কামড়ে আহত হন সিউড়ি থানার এক এএসআই। আহতের নাম সন্তোষ চৌধুরী। জানা গিয়েছে, এ দিন তিনি তিলপাড়া সংলগ্ন সিউড়ি রামকৃষ্ণ শিল্প বিদ্যাপীঠের সামনের রাস্তায় ডিউটিতে ছিলেন। সেই সময়েই একটি হনুমান এসে তাঁর কাঁধে চেপে বসে। বার দুয়েক তিনি তাকে সরিয়েও দেন। এর পর হঠাৎ করে হনুমানটি লাফিয়ে তাঁর গায়ে এসে পড়ে এবং গালে কামড়ে দেয়। আহত অবস্থাতে ওই পুলিশ কর্মীকে তড়িঘড়ি সিউড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় ওই পুলিশকর্মীকে।
স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। গত ১৭ মার্চ সিউড়ির তিলপাড়া ব্যারেজে ডিউটি করতে গিয়ে হনুমানের কামড় খেয়েছিলেন শেখ আশরাফ নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ার। ব্যারেজ সংলগ্ন জাতীয় সড়কে তিনি যখন ট্রাফিক সামলাচ্ছিলেন সেই সময়ে একটি হনুমান তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নামে কামড়ে দেয়। তাঁকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।
এলাকাবাসীর কথায়, সাম্প্রতিক সময়ে ওই এলাকায় হনুমানের দাপট বেড়েছে। সাধারণ মানুষরা ভয়ে ভয়ে রাস্তায় বার হন। এমনকী, সেই এলাকায় হনুমানের আতঙ্কে বন্ধ রাখতে হচ্ছে সেচ দপ্তরের অফিসের দরজাও। সেচ দপ্তরের কর্মী সুখেন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মাস চারেক আগে একটি হনুমান অফিসে ঢুকে কলম নিয়ে চলে গিয়েছিল। কখনও আবার অফিসে ঢুকে টেবিলে বসে দিব্যি খাওয়া-দাওয়া করত। এমনকী সেচ দপ্তরের এক কর্মীর মোবাইল পর্যন্ত নিয়ে চলে যায়। এর পরেই হনুমানের আতঙ্কে সেচ দপ্তরের দরজা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই লাগাতার ‘অত্যাচার’-এ রীতিমতো ফুঁসছে এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, ‘একটা হেস্তনেস্ত হওয়া দরকার।’
এই ঘটনায় বীরভূমের ডিএফও রাহুল কুমার বলেন, ‘এই বিষয়টি সামনে আসার পর আমি রেঞ্জ অফিসারকে বলেছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।’