• ‘তৃণমূলের জন্য আমি বিধায়ক…’, নিজের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন, বিজেপির কটাক্ষের মুখে চুঁচুড়ার বিধায়ক
    এই সময় | ২৫ মার্চ ২০২৫
  • নিজের যোগ্যতায় নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের জন্যই তিনি বিধায়ক হতে পেরেছেন। ব্যক্তির থেকে দলকে এগিয়ে রেখে, দলীয় কর্মীদের স্পষ্ট বার্তা চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের। রবিবার মগরা ব্লকের সপ্তগ্রামে কর্মীসভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমার কী যোগ্যতা আছে। আমি একটা চাকরি করতাম। সেখানে ৪০-৫০ হাজার টাকা বেতন পেতাম। কিন্তু আমি এখন বিধায়ক হয়ে এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি বেতন পাই। পাঁচ লক্ষ টাকা বছরে পাই প্লেনে করে যাতায়াতের জন্য। রাজধানী এক্সপ্রেসে ফ্রিতে দু’জন করে সঙ্গী নিয়ে ঘুরতে পারি।’

    কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিধায়ক অসিত মজুমদার আরও বলেন, ‘পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষরা বেতন পান। কিন্তু সাধারণ কর্মীরা কিছু পান না। অথচ তাঁরাই ভোটার লিস্টে ভালো স্কুটিনির কাজ করছেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা ফাঁকিবাজি করে বেড়াচ্ছেন। ভোটার তালিকায় ভুয়ো নাম ঢোকানো হচ্ছে। সেগুলো যদি আমরা ধরতে না পারি, স্কুটিনির নাম করে ভোটার তালিকা আলমারিতে বা বালিশের তলায় রেখে দিই, তা হলে কারও ক্ষমতা নেই সেটা জানার।’

    চুঁচুড়ার বিধায়ক জানিয়েছেন, যদি কেউ তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, তা হলে সে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। সেই বিশ্বাসঘাতকদের খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নিজেকে না ভালবেসে, তৃণমূলকে নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করার পরামর্শ দেন দলের নেতা-কর্মীদের।

    তৃণমূলে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘দলের মধ্যে নতুন-পুরোনো কোন ব্যাপার নেই। নতুনদের পাশাপাশি পুরোনোদেরও গুরুত্ব দিতে হবে। তাঁরা আমাদের শক্তি। পুরোনোদের অভিজ্ঞতা ও নতুনদের এর্নাজির সংমিশ্রণে আমাদের কাজ করতে হবে। ২০২৬ সালে আমাদের লড়াই করতে হবে। আমরা এবার ২৫০-এর বেশি আসন দখল করব। তার জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্ভরযোগ্য দল তৈরী করছেন।’

    চুঁচুড়ার বিধায়কের এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ। তিনি বলেছেন, ‘বিধায়ক নিজেই স্বীকার করে নিচ্ছেন যে তাঁর কোনও যোগ্যতা নেই। দিদির দয়ায় খেয়ে পড়ে বেঁচে আছেন। সেই অযোগ্যতা নিয়ে পদত্যাগ করে ফেলুন। চুঁচুড়া বিধানসভার মানুষেরও বোঝা উচিত কাদের ভোট দিয়ে বিধায়ক নির্বাচিত করেছেন।’

    যদিও পরে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যাও দেন অসিত মজুমদার। চুঁচুড়ার বিধায়কের দাবি, ‘দলে যারা ফাঁকি মারে তাদের জন্য এই কথা বলেছি। ভোটার লিস্ট কী ভাবে করতে হবে? দলের নির্দেশ কী আছে? সেটাই বলছিলাম কর্মীদের। দু’-একজন ফাঁকি মারে। তবে যাতে আর কেউ ফাঁকি মারতে না পারে, সেই কারণেই এই কথা বলেছি।’

  • Link to this news (এই সময়)