• বঙ্গের গোলা ভরছে পেঁয়াজে, নির্ভরতা কমছে ভিন রাজ্যের উপরে
    এই সময় | ২৫ মার্চ ২০২৫
  • ফি বছরের গল্প। শুরু হয় অগস্টে, চলতে থাকে বছরের শেষ পর্যন্ত। পেঁয়াজের দামের ঝাঁজে চোখে জল আসে মধ্যবিত্ত বাঙালির। এ বছর ছবিটা কিছুটা বদলে দিয়েছিল কৃষি বিপণন দপ্তর। সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতিতে কিছুটা রাশ টানা গিয়েছিল।

    গত বছরের সাফল্যের পরে এ বার সংরক্ষণ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়েছে দপ্তর। সরকারি ভাবে পেঁয়াজ সংরক্ষণ পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি সরকারি অর্থে চাষিদের বাড়িতে পেঁয়াজের গোলাও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি এবং ব্যক্তিগত মিলিয়ে প্রায় ৬৫ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। ফলে পেঁয়াজের জন্যে যেমন ভিন রাজ্যের মুখাপেক্ষী হতে হবে না, তেমনই দামের ফাটকাবাজিও বন্ধ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    কৃষি বিপণন দপ্তর থেকে পেঁয়াজ সংরক্ষণের আটটি আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। হুগলির বলাগড়, পোলবা, পূর্ব বর্ধমানের কালনা-২, পূর্বস্থলী-১, মুর্শিদাবাদের নওদা, সাগরদিঘি, নদিয়ার হাঁসখালি এবং মালদার গাজোলে তৈরি এই সংরক্ষণাগারগুলির প্রতিটিতে ৪০০ কুইন্টাল করে পেঁয়াজ রাখা যাবে।

    এখন শীতের পেঁয়াজ বাজারে আসছে। সুফল বাংলা সরাসরি সেই পেঁয়াজ চাষিদের থেকে কিনছে। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের কুইন্টাল–প্রতি পাইকারি দাম ১৬০০-১৮০০ টাকা। আবার রেগুলেটেড মার্কেট কমিটি কুইন্টাল–প্রতি ২২০০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনছে।

    অন্য দিকে, গত বারের ৩৬০০–র সঙ্গে এ বছর চাষিদের বাড়িতে ব্যক্তিগত আরও ১৪০০ পেঁয়াজের গোলা তৈরি হয়েছে। এই ৫০০০ গোলায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। ইতিমধ্যে সুফল বাংলার মাধ্যমে কৃষি বিপণন দপ্তর ১৫০০ কুইন্টাল পেঁয়াজ কিনেছে। বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়লে ভিন রাজ্য থেকে কেনা পেঁয়াজ সাধারণের স্বার্থে ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করে সুফল বাংলা।

    কৃষি বিপণন দপ্তরের এক কর্তা জানান, গত বছর যেহেতু পেঁয়াজের গোলা তৈরি করা হয়েছিল, তাই সুফল বাংলার পক্ষ থেকে সরাসরি চাষিদের বাড়ি থেকে পেঁয়াজ ন্যায্য মূল্যে কিনে গ্রাহকদের কম দামে বিক্রি করেছিল সুফল বাংলা। এ বছর সংরক্ষিত পেঁয়াজের পরিমাণ অনেক বেশি, তাই এ বছর জুলাই-অগস্টে আকাল শুরু হলে সংরক্ষিত পেঁয়াজই বাজারে সুলভে বিক্রি করা হবে।

    পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলে অসাধু ব্যবসায়ীরা মজুত রেখে চড়া দামে বেচতে পারবেন না। কৃষি বিপণন দপ্তর জানাচ্ছে, কেউ ব্যক্তিগত ভাবে পেঁয়াজের সংরক্ষণাগার তৈরি করলে দপ্তর ৫০ শতাংশ (৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত) ভর্তুকি দেবে। অন্য ফসলের মতো পেঁয়াজ হিমঘরে রাখা যায় না। মূলত শুষ্ক আবহাওয়ায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে হয়। মাটি বা অন্য কিছুর সংস্পর্ষে না এলে এ ভাবে পেঁয়াজ দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।

  • Link to this news (এই সময়)