• সুন্দরবনের কৈখালিতে শুরু কংক্রিটের নদীবাঁধ নির্মাণের কাজ, স্বস্তিতে এলাকাবাসী
    এই সময় | ২৫ মার্চ ২০২৫
  • এপ্রিল মানেই কালবৈশাখী থেকে একের পর এক ঘূর্ণিঝড়। তাই ক্যালেন্ডারের পাতায় এপ্রিল মাস এলেই আতঙ্কে থাকেন সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দারা ৷ বছরের এই সময়টা ঘূর্ণিঝড় ও বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় দিন কাটে তাদের ৷ তবে এ বার অনেকটাই আশঙ্কামুক্ত হতে চলেছেন কৈখালির বাসিন্দারা ৷ গোপালগঞ্জের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার কৈখালিতে শুরু হয়েছে কংক্রিটের নদী বাঁধ নির্মাণের কাজ।

    একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষত আয়লা থেকে আমফানের আঘাতে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই এলাকার নদীবাঁধ। ফলে বছর বছর ক্ষতির মুখে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এবার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা আশার আলো দেখাচ্ছে সকলকে।

    এই এলাকার নদীর পাড়ে বসবাসকারী মানুষজন প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটান। প্রতিবছর ঝড় আছড়ে পড়ে সুন্দরবনের উপকূলেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় থমকে যায় জনজীবন। তবে কৈখালি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে এবং সেখানে পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়ছে। এ অবস্থায় একটি শক্তিশালী এবং টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। তাদের সেই দাবির বাস্তবায়ন এ বার শুরু হয়েছে।

    বাঁধ নির্মাণের কাজ দেখতে গিয়ে স্থানীয়দের চোখে-মুখে দেখা যায় স্বস্তির ছাপ। এই বাঁধ তাদের দীর্ঘদিনের দুশ্চিন্তা দূর করবে বলে আশা করছেন তারা। পর্যটক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও মনে করছেন, এই স্থায়ী বাঁধ তৈরি হলে তাদের ব্যবসাও আরও সুরক্ষিত হবে। তবে তারা চাইছেন, নির্মাণকাজ যেন সঠিকভাবে এবং নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হয়। অনিয়ম হলে তা নিয়ে যাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

    উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার এর আগেও এই অঞ্চলে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় উদ্বেগে ছিলেন স্থানীয়রা। তবে এ বার সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। গোপালগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকাকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে ১৪০০ মিটার দীর্ঘ এই কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। কুলতলি বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, এই বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হলে স্থানীয়রা দীর্ঘস্থায়ী সমাধান পাবেন এবং নদী ভাঙনের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাবেন।

    স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, বাঁধ তৈরি হলে আর প্রতিবছর নদী ভাঙনের আশঙ্কায় দিন কাটাতে হবে না। একইসঙ্গে পর্যটন ব্যবসায়ীদের কাছেও এটি বড় স্বস্তির বিষয়। ভবিষ্যতে যেন আরও উন্নত অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়, সেই প্রত্যাশাও রয়েছে সকলের।

  • Link to this news (এই সময়)