• জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করলেন স্বামী, মালদার ঘটনায় হতবাক গ্রামের লোকজন
    এই সময় | ২৫ মার্চ ২০২৫
  • উওর দিনাজপুরের পর এ বার মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর। সেখানে জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করলেন তাঁর স্বামী। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। ঘটনাটি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পরাশটলা গ্রামের। সেই গ্রামের বাসিন্দা অচিন্ত্য রায়ের দাবি, ১৯ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর তাঁর স্ত্রী দ্রৌপদী রায় পালিয়ে গিয়েছেন। সূত্রের খবর, গত ১৮ মার্চ দুপুরে প্রেমিকের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যান স্ত্রী দ্রৌপদী রায়। দ্রৌপদী রায় প্রেমিকের সঙ্গে নতুন সংসার জীবন শুরু করেছেন খবর পেয়ে অচিন্ত্য রায় ভেঙে পড়েছিলেন। তাই স্ত্রীকে ভুলে যেতে তাঁর শ্রাদ্ধ করেন তিনি।

    অচিন্ত্য রায় পেশায় রাজ মিস্ত্রি। তাঁরা নিঃসন্তান দম্পতি। পালিয়ে যাওয়ার পর ফেসবুকে প্রেমিকের সঙ্গে রিলস বানিয়ে অচিন্ত্যকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান তাঁর স্ত্রী। তবে স্ত্রী ঘর ছাড়ায় তাঁর সামাজিক মর্যাদা এবং পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন অচিন্ত্য। তাই স্ত্রীকে মৃত বলে মনে করে তাঁর শ্রাদ্ধ করেন তিনি। মঙ্গলবার হিন্দু রীতি অনুযায়ী শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

    তবে শুধু শ্রাদ্ধই নয়, এর পাশাপাশি গ্রামবাসীদের, আত্মীয় স্বজনদের জন্য খাওয়া-দাওয়ারও আয়োজন করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অচিন্ত্য রায় মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। পরিবারের সদস্য আশালতা রায় জানিয়েছেন, ‘আমাদের বাড়ির বউ তাঁর পরিচিতর সঙ্গে ঘর ছেড়েছে। তাই আমরা তাঁর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।'

    স্বামী অচিন্ত্য রায় বলেন, ‘পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। তবে সন্তান না হওয়ার একটা দুঃখ ছিল। রাজমিস্ত্রি করে যা ইনকাম করতাম সমস্তটাই স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে জমা রাখতাম। স্ত্রী প্রায়ই গভীর রাত পর্যন্ত ফোনে কথা বলত। আমি অনেক শাসন করেছিলাম। শ্বশুরবাড়িতেও জানিয়েছিলাম। আমি কাজ করতে বাইরে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী বাড়িতে নেই। সমস্ত নতুন কাপড়চোপড়, বিয়ের গয়না ও চল্লিশ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি। এখন প্রেমিকের সঙ্গে ফেসবুকে রিলস শেয়ার করে আমাকে পাঠাচ্ছে।’ পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দ্রৌপদী রায়ের বাপের বাড়ির লোকেরা এই বিষয়ে জানেন। কম করে ৫ লাখ টাকা নিয়ে দ্রৌপদী রায় পালিয়েছে বলে অচিন্ত্যর অভিযোগ।

    প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার সোনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে পরিবারের অমতে প্রেম করে ভিন্ন সম্প্রদায়ে বিয়ে করার কারণে জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ করেছিলেন বাবা।

  • Link to this news (এই সময়)