• স্লেটেই মূর্তি গড়েন সুবীর, ছবি যাচ্ছে বিদেশও
    এই সময় | ২৫ মার্চ ২০২৫
  • বুদ্ধদেব বেরা ■ ঝাড়গ্রাম

    বাড়িতে সাজানো রকমারি স্লেট। সেই স্লেটে অবশ্য লেখা হয় না। আঁকা হয় ছবি। তা-ও আবার চক–পেনসিল দিয়ে নয়। ঝাড়গ্রামের সুবীর বিশ্বাস স্লেটের উপরে ছবি খোদাই করেন। ছোট্ট একটা ছেনির মতো যন্ত্র দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন নানা রকমের মূর্তি। দুর্গা থেকে সলিল চৌধুরী, কী নেই তাঁর সৃষ্টিতে! তাঁর এই শিল্পকীর্তি এখন পাড়ি দেয় আমেরিকা, লন্ডন, ইউক্রেন,রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ায়।

    ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা এলাকায় বাসিন্দা সুবীর। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে স্লেটের উপরে খোদাই করে ফুটিয়ে তুলেছেন অসংখ্য মূর্তি। এখনও পর্যন্ত দশ হাজারেরও বেশি স্লেট খোদাই করেছেন। ছোট থেকেই গাছের শিকড়, গুঁড়ি, বাঁশের গোড়া দিয়ে জাহাজ, ফুলদানি, ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করতেন। সুবীর জানিয়েছেন, এক কাঠমিস্ত্রির স্লেটের উপরে বাটালি শান দেওয়া দেখে মনে হয়েছিল স্লেটের উপরেও ছবি খোদাই করা যায়। হঠাৎ করেই একদিন চার্লি চ্যাপলিনের ছবি ফুটিয়ে তোলেন স্লেটে। সেটাই ছিল তাঁর প্রথম কাজ। তার পরে সেটা একটা নেশায় পরিণত হয়ে যায়।

    ধীরে ধীরে সুবীরের সৃষ্টি পরিচিতি পেতে শুরু করে জেলায়। বেলুড় মঠের অর্ডারে এখনও পর্যন্ত ১০০টির বেশি স্বামী বিবেকানন্দের মুখাবয়ব তৈরি করেছেন। সলিল চৌধুরীর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে অতিথি বরণের জন্য ৩৫টি স্লেটের উপরে ফুটিয়ে তোলেন সলিল চৌধুরীর মুখাবয়ব। বছর কয়েক আগে অনেকগুলো ছোট ছোট স্লেট একসূত্রে বেঁধে খোদাই করে তৈরি করেন দুর্গার চিত্র। ৮ ফুট উচ্চতা এবং ৬ ফুট চওড়ার দুর্গার ছবি খোদাই করতে প্রায় ১০০টি স্লেট ব্যবহার হয়েছে।

    এ ছাড়াও লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতীর ছবি খোদাই করতে ৬০ থেকে ৭০ টি করে স্লেট লেগেছে। প্রায় ৪০০টি স্লেট খোদাই করে সপরিবারে দুর্গার রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন সুবীর। তিনি বলেন, 'সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদেশ থেকে কয়েকজন তাঁদের ছবি পাঠিয়েছিলেন স্লেটে খোদাই করার জন্য। আমি সেগুলো তৈরি করে তাঁদের ঠিকানায় পাঠিয়েও দিয়েছি।'

  • Link to this news (এই সময়)