ফুল কেনার লোক নেই! উঠছে না বহনের খরচটুকুও, হতাশায় বড় সিদ্ধান্ত ফুলচাষিদের ...
আজকাল | ২৫ মার্চ ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফুল চাষের গড়ে নেই ফুল রাখার স্টোরেজ। নেই কেনার চাহিদাও। অথচ ফুল হয়েছে বিপুল পরিমাণে। এই পরিস্থিতিতে ফুলচাষিরা সড়ক রাস্তার ধারে নয়নজুলিতে ফেলে দিয়ে ঘরে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। রাস্তার ধারে এমন দৃশ্য। দাসপুর থানার যোশরা কালিবাজার, খুকুড়দহ সহ পাশ্ববর্তী কেশিয়াপাঠ মৌজায় দিকে এই ঘটনা।
স্বাভাবিকভাবেই ফুলচাষিদের জন্য এই ঘটনা সুখকর নয়। কী বলছেন তাঁরা? দাসপুরের রবিদাসপুর গ্রামের শ্যামসুন্দর দোলই বলেন, ‘দেড় বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। এখন প্রতিদিন জল খরচ-সহ ফুল তুলতে মজুরি খরচ রয়েছে। বাজারে ফুল কেনার লোক নেই। হাতে গোনা কয়েক জন ফুল কিনলেও কেজি প্রতি দর আড়াই থেকে তিন টাকা। গত চার দিনে আগের বাজারের চেয়ে ১৭-১৮ টাকা কম।‘ পার্বতীপুরের বাসন্তী খাঁ বলেন, ‘বর্ষার সময় থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের জমি জলের তলায় থাকে। আর এই সময় ফুল চাষ করেই সারা বছর সংসারের খরচ চালাই। শীতে ৩০-৩৫ টাকা দর পেয়েছি। তারপর ফেব্রুয়ারীর পঞ্চমীর পর থেকে দাম কমতে কমতে ২০-২২ টাকায় দাঁড়ায়। গত চারদিনে দাম কমতে কমতে ৫-৬ টাকা হয়েছে। আজ সেই ফুল কেনারই লোক নেই। যে দু’-চারজন পাইকার এসেছিল তাঁরা দর দেন আড়াই টাকা। এতে তো বহন খরচও উঠবে না। বেলা সাতটা আটটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও বিক্রি না হওয়ায় শয়ে শয়ে ফুল চাষি সড়ক রাস্তার ধারে একাধিক জায়গায় ফুল ফেলে বাড়ি ফিরে যান।‘
জেলায় আলুর পরই অর্থকারী ফসল ফুল চাষ। বহু জায়গায় মাঠেই আলুর স্তূপ ত্রিপল ঢাকা দিয়ে ফেলে রেখেছেন কৃষকরা। এখন আলুর পর ফুল চাষিরাও সংকেটে। ফড়েদের হাতেই বাজার দখল ও নিয়ন্ত্রণ চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দাসপুর, ডেবরা, বালিচক, রাধামোহনপুর, শ্যামচক, মাদপুর জকপুর, এমনকি সবং পিংলা ব্লকগুলির বহু মৌজায় ফুলের চাষ বেড়েছে। অপর দিকে ঝাড়গ্রাম জেলার চন্দ্রী, বিনপুর, জাম্বনী এলাকায়ও গত ২-৩ বছর ধরে ফুল চাষ শুরু হয়েছে। চাষের নজরদারী, সার ওষুধ, মজুরী করচ বেশি হলেও ধান-সবজি চাষের চেয়ে লাভের পরিমান বেশি। তাই ফুল চাষের দিকে ঝোঁক বেড়েছিল বহু মৌজায়। হঠাৎ করে ফুল কেনারই লোক নেই।