• রাজ্যকে বাদ দিয়ে নয় গঙ্গা-তিস্তা চুক্তি, রাজ্যসভায় সওয়াল তৃণমূলের
    এই সময় | ২৬ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না–করে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা জলচুক্তি করা হলে তা নিয়ে প্রবল আপত্তি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাংলাদেশকে তিস্তার জল দেওয়া নিয়ে রাজ্যসভায় মঙ্গলবার সরব হয়েছে তৃণমূল।

    সিকিমে একাধিক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, আপার ক্যাচমেন্ট এলাকায় দেদার গাছ কাটার কারণে তিস্তায় জল অনেক কমে গিয়েছে বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার জল–বণ্টনের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সরকারের তিস্তা জল বণ্টন চুক্তি হলে উত্তরবঙ্গের লক্ষাধিক কৃষক চাষের জল পাবেন না। একই সঙ্গে পানীয় জলেরও প্রবল সমস্যা হবে।

    এ দিন রাজ্যসভায় উল্লেখ–পর্বে ঋতব্রত বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই তিস্তায় জল কমতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার জল–বণ্টন বাস্তবসম্মত নয়। তিস্তার জল বাংলাদেশকে দেওয়ার আগে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন।’

    একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণে ইন্দো–ভুটান রিভার কমিশনও গঠন করা প্রয়োজন বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছেন ঋতব্রত। তিস্তার জল বাংলাদেশকে দেওয়া তৃণমূল বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করলেও এই বিষয়ে বঙ্গ বিজেপি সাবধানী অবস্থান নিয়েছে।

    বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘আমরা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালো রাখার পক্ষপাতী। দেশের স্বার্থকে বিজেপি সব সময়ে অগ্রাধিকার দেয়। তিস্তার জল–বণ্টনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। এই বিষয়ে দলের তরফে আমরা বাড়তি কিছু বলতে চাইছি না।’

    তিস্তার জলবণ্টনের পাশাপাশি ফরাক্কা চুক্তি ২০২৬ সালে নবীকরণ হওয়ার কথা রয়েছে। এই বিষয়ে কেন্দ্র প্রাথমিক আলোচনাও শুরু করেছিল। ফরাক্কা চুক্তি নবীকরণ করার আগে নতুন চুক্তির প্রতিটি অনুচ্ছেদ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন বলে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছেন ঋতব্রত।

    ১৯৯৬ সালে ভারত–বাংলাদেশ ফরাক্কা জলচুক্তি হয়। এর নেতিবাচক প্রভাব রাজ্যের উপরে পড়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য। জোড়াফুলের যুক্তি, এর ফলে নদী ভাঙন বেড়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, জীবন–জীবিকার ক্ষতি হয়েছে।

    ঋতব্রত এ দিন বলেন, ‘গঙ্গায় জল কমে যাওয়ার প্রভাব কলকাতা বন্দরের উপরেও পড়েছে। সুন্দরবন অঞ্চলেও প্রভাব পড়েছে। ফরাক্কা চুক্তি নবীকরণের প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় সরকার শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ফরাক্কা ব্যারেজ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তিনটি চিঠি দিয়েছেন। এই চুক্তির নবীকরণ সংক্রান্ত প্রতিটি অনুচ্ছেদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই বিষয়েও রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রকে আলোচনা করতে হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)