• মানি লন্ডারিংয়ের টাকায় জমির কারবার! ফাঁসিদেওয়ায় ধৃত সইদুলের তিনটি জমির হদিশ, ক্রোকের প্রক্রিয়া শুরু পুলিসের
    বর্তমান | ২৬ মার্চ ২০২৫
  • সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: মানি লন্ডারিংয়ের টাকা জমির কারবারে বিনিয়োগ! প্রায় ১১ মাস ধরে মানি লন্ডারিং নিয়ে তদন্ত চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে পুলিস। ইতিমধ্যে তারা চক্রের মাস্টার মাইন্ড তথা মোবইল ফোনের মেকার ধৃত মহম্মদ সইদুলের তিনটি জমি চিহ্নিত করেছে। সেগুলির মধ্যে দু’টিতে বহুতল মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট জমির দাম কয়েক কোটি টাকা। সেগুলি ক্রোক করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুলিস। ইতিমধ্যে তারা এ ব্যাপারে আদালতে আবেদন জানিয়েছে বলে খবর। 

    দার্জিলিং জেলা পুলিসের এক শীর্ষ অফিসার বলেন, ধৃত সইদুল ‘মিউল’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে মানি লন্ডারিং সিন্ডিকেটের কাছে ভাড়া দিত। এজন্য সে অ্যাকাউন্ট পিছু মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা করে কমিশন পেত। সেই টাকা সে জমির ব্যবসায় খাটিয়েছে বলে খবর। এছাড়া সে নামে ও বেনামে আরও সম্পত্তি করেছে বলে মনে হচ্ছে। 

    দার্জিলিং জেলা পুলিসের এসডিপিও (নকশালবাড়ি) নেহা জৈন বলেন, ধৃতের বিরুদ্ধে কিছু তথ্য মিলেছে। সেগুলি বিভিন্ন দিক থেকে যাচাই করা হচ্ছে। পাশাপাশি ধৃতের সম্পত্তির ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। 

    ফাঁসিদেওয়া থানার চটহাটে ধৃত সইদুলের বাড়ি। মোবাইল ফোন সারাইয়ের দোকানের আড়ালে মানি লন্ডারিং সিন্ডিকেটের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করত বলে অভিযোগ। ধৃতের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে পুলিস অফিসাররা বিস্মিত। পুলিস সূত্রে খবর, মোবাইল দোকানের আড়ালে দুই থেকে তিন বছর ধরে মানি লন্ডারিংয়ের কারবার করছিল সে। এতেই সে ফুলেফেঁপে ওঠে। 

    বিলাহবহুল গাড়ি ছাড়া চলাফেরা করতে না। মাঝেমধ্যে বিমানে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিত। এমনকী, প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও দুবইতেই গিয়েছিল সে। এমন জীবন যাপনের পাশাপাশি সে একটি অনলাইন সংস্থান চালু করেছিল। জমি কিনে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরিরও ছক কষেছিল। 

    ফাঁসিদেওয়া থানার এক পুলিস অফিসার জানান, ধৃতের নামে ফাঁসিদেওয়ায় তিনটি জমির হদিশ মিলেছে। যারমধ্যে হাগুড়াগছে ১২ ডেসিমেল একটি জমি রয়েছে। তাতে চারতলা মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কাজ চলছে। চটহাট বাজারে আরএকটি জমি রয়েছে। তাতেও চলছে ভবন নির্মাণ। এরবাইরে প্রিয়াপুকুর মোড়ে ধৃতের আরএকটি জমি রয়েছে। সেটি অবশ্য পতিত। 

    এরবাইরে সে আশপাশ এলাকায় আরও কিছু সম্পত্তি করেছে বলে মনে হচ্ছে। মানি লন্ডারিং থেকে অর্জিত টাকা থেকেই সে ওই সম্পত্তিগুলি করেছে বলে খবর। তা না হলে শুধুমাত্র মোবাইল ফোনের দোকান করে জমিগুলি কেনা সম্ভব নয়। তিনটি জমির দাম কোটি টাকার উপরে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

    পুলিস সংশ্লিষ্ট জমিগুলি ক্রোক করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পুলিসের এক অফিসার বলেন, অনলাইন প্রতারণা চক্রের টাকা মিউল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সাদা করেছে সইদুল। অর্থাৎ অসাধু উপায়ে ধৃত সেই অর্থ উপার্জন করেছে। তা দিয়ে সেই সম্পত্তিগুলি করেছে। আইন অনুসারে সেগুলি ক্রোক করার আবেদন আদালতের কাছে জানানো হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)