তৃণমূলকে হারাতে কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে জোট বাঁধল বিজেপি-সিপিএম
বর্তমান | ২৬ মার্চ ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: তৃণমূলকে হারাতে নলহাটি-২ ব্লকের শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের কামালপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে জোট বেঁধেছে বিজেপি-সিপিএম। মঙ্গলবার দুই দলের প্রার্থীরা একসঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। ছ’টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে বিজেপি ও দু’টি সিপিএমের মনোনয়ন জমা পড়েছে। তাই দেখে তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপি-সিপিএমের মুখ আর মুখোশ আলাদা। মানুষ তাদের জবাব দেবে।
সমিতির মোট আসন সংখ্যা ছয়। সমবায়টি বেড়াশিমূল গ্রামে অবস্থিত। কল্যাণপুর, বেড়াশিমূল, বারুনিঘাটা, কামালপুর, সাহেবনগর ও টিঠিডাঙা গ্রাম নিয়ে এই সমবায় গঠিত। দীর্ঘ ২৫ বছর পর এই সমবায়ের নির্বাচন হচ্ছে। এতদিন সমবায় সমিতির শেয়ার হোল্ডারদের নিয়ে পরিচালন কমিটি গঠন হয়ে এসেছে। আগামী ১৩ এপ্রিল এই সমবায়ের নির্বাচন। তার আগে সোম ও মঙ্গলবার চলেছে মনোনয়ন পর্ব। সোমবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে ছ’টি আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এদিন সিপিএম ও বিজেপি একসঙ্গে এসে সাতটি মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এছাড়াও বেড়াশিমূল গ্রামের এক ব্যক্তি নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, বিজেপির পক্ষ থেকে পাঁচটি ও সিপিএমের পক্ষ থেকে দু’টি মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার মনোনয়ন স্ক্রুটিনি করা হবে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একসঙ্গে লড়াই করে শীতলগ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি জোট। সমবায় নির্বাচনেও একই কৌশল নিয়েছে তারা। এলাকার বিজেপি নেতা ঝলক মণ্ডল বলেন, প্রশাসনের কাছে অনেক আবেদন করার পর এই নির্বাচন হচ্ছে। বিজেপি, সিপিএম মিলে মনোনয়ন জমা দিলাম। কংগ্রেসের কেউ নেই। সাহেবনগর ও টিঠিডাঙা মুসলিম অধ্যুষিত হওয়ায় ওই দু’টি আসন সিপিএমকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি গ্রামগুলিতে আমাদের শক্তি বেশি হওয়ায় সেখান থেকে প্রার্থী দিয়েছি। একেবারে বিপরীত মেরু সিপিএমের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে ঝলকবাবু বলেন, পঞ্চায়েতে টিঠিডাঙায় সিপিএম জিতেছে। সাহেবনগরে তৃণমূল জিতেছে। সেখানে আমাদের প্রার্থী হচ্ছে না। তাই সিপিএমকে সঙ্গে নিয়েছি। সিপিএম নেতাদের সঙ্গে একসঙ্গে বসেই মনোনয়ন জমা দিলাম। এর কোনও প্রভাব পড়বে না। বোর্ড আমাদেরই হবে।
অন্যদিকে সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য রোহন শেখ বলেন, দু’টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছি। বাকিগুলিতে তেমন সংগঠন নেই। বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপির সঙ্গে তো আমাদের লড়ার কথা নয়। আমাদের মূল শত্রু এখন তৃণমূল। এতদিন অনৈতিকভাবে সমবায় চালাচ্ছিল তারা। এই জায়গা ভাঙতে গিয়ে রাস্তায় এখন যদি বিজেপি এসে দাঁড়ায় তাহলে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে। তাছাড়া এখানে কোনও সিম্বল দিয়ে লড়াই হচ্ছে না।
তৃণমূলের এই ব্লকের ফাইভম্যান কমিটির সদস্য আবু জাহের রানা বলেন, রাজ্যস্তরে বিজেপি এরং সিপিএম নেতারা একে অপরের ছোয়াঁচ এড়িয়ে চলার ড্রামা করে। অথচ বাস্তবে তারা এক। ওদের মুখ আর মুখোশ সম্পূর্ণ আলাদা। মানুষ সমস্তটাই দেখছে। এখন এই সমবায় কার দখলে যায়, সেটার দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।