• শহরের রাজপথে লেজার স্পিড গান, আচমকা হানা, ঘণ্টায় ৫০ কিমি গতি পেরলেই জরিমানা
    বর্তমান | ২৬ মার্চ ২০২৫
  • স্বার্ণিক দাস, কলকাতা: রাস্তা ফাঁকা। গাড়ি হোক কিংবা বাইক, এমন লোভনীয় সুযোগ কে-ই বা ছাড়তে চায়! মুহূর্তে স্পিডোমিটারের কাঁটা ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটারের ঘরে। কিন্তু সেই ফাঁকা রাস্তাতেও গাড়ি কিংবা বাড়ির আড়ালে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে হাইওয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোলের জিপ। নির্ধারিত গতির সীমা লঙ্ঘন করলেই ‘স্পিড লেজার গানে’র খপ্পরে বাইক কিংবা গাড়িচালক। তারপরই লঙ্ঘনকারীর পিছনে সাইরেন বাজিয়ে ধাওয়া পুলিসের—বিদেশি সিনেমায় হামেশাই দেখা যায় এই দৃশ্য। এবার সেই ধাঁচে কলকাতায় রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে লাগাম টানতে তৈরি লালবাজার। আসছে অত্যাধুনিক ‘স্পিড লেজার গান’। হবে ‘সারপ্রাইজ স্পিড চেকিং’। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিসের ট্রাফিক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে তার মহড়া হয়ে গিয়েছে রেড রোডে। 

    লালবাজার সূত্রে খবর, বেসরকারি একটি সফ্টওয়্যার সংস্থার সঙ্গে বিশেষ চুক্তিতে প্রাথমিকভাবে কেনা হচ্ছে ১৫টি স্পিড লেজার গান। ইতিমধ্যেই শহরে গাড়ি-বাইকের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারে বেঁধে দিয়েছেন পুলিস কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা। তাও রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ সহ কলকাতার নির্দিষ্ট কিছু সড়কের জন্য। বাকি রাস্তায় আরও কম। সেই গতিসীমা লঙ্ঘন করলেই যে কোনও মূহূর্তে ট্রাফিক পুলিসের নিশানায় আসতে পারে আম জনতার গাড়ি কিংবা বাইক। কারণ, সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে কলকাতায় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে ‘দায়ী’ বেপরোয়া গতি। তাই দুর্ঘটনায় রাশ টানতেই কড়া হাতে পদক্ষেপ কলকাতা পুলিসের।

    ট্রাফিক বিভাগ সূত্রের খবর, স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরিমানা করার জন্য কলকাতার নির্দিষ্ট জায়গায় স্থায়ীভাবে বসানো রয়েছে স্পিড ক্যামেরা। সেটা মূলত শহরের ফাঁকা ও সোজা রাস্তাগুলিতেই। ই এম বাইপাসেই প্রায় আটটি ‘ব্ল্যাক স্পটে’ এই ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। বাদ যায়নি এজেসি বোস ফ্লাইওভার, গার্ডেনরিচ ফ্লাইওভার, ডায়মন্ড হারবার রোডও। তা সত্ত্বেও অনেকেই ভাঙছেন নিয়ম। কলকাতা পুলিসের এক কর্তা জানিয়েছেন, নিত্যদিন যাওয়া-আসা করতে করতে ওই পথে কোথায় কোথায় স্পিড ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, তা জেনে গিয়েছেন বাইক-গাড়িচালকরা। ফলে তাঁরা নির্দিষ্ট জায়গায় গতি কমাচ্ছেন। আর ক্যামেরা পার হলেই ফিরে আসছেন বেপরোয়া গতিতে। এছাড়া মা ফ্লাইওভার ও ই এম বাইপাসে স্পোর্টস কার কিংবা বাইকে চেপে ভিডিও বা রিল বানানোর প্রবণতাও রয়েছে। তাই লালবাজার ‘সারপ্রাইজ স্পিড চেকিং’য়ের পথে হাঁটছে।

    কিন্তু কীভাবে কাজ করবে এই স্পিড লেজার গান? এতে রয়েছে লেজার রশ্মি ছোড়ার ব্যবস্থা। সঙ্গে উন্নতমানের ক্যামেরা। চলন্ত গাড়ির দিকে তাক করে লেজার রশ্মি ফেললেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে স্ক্রিনে ভেসে উঠবে গাড়ির গতি। সেটি সীমা লঙ্ঘন করলেই গাড়িটির নম্বরপ্লেটের ছবি উঠে যাবে ক্যামেরায়। সেই নম্বর দেখে জরিমানা করবে নির্দিষ্ট ট্রাফিক গার্ড। লালবাজার সূত্রের খবর, ট্রাফিক বিভাগের স্পেশাল রেইড শাখাও এই দায়িত্ব পেতে পারে।
  • Link to this news (বর্তমান)