• স্থায়ী উপাচার্যের দাবিতে বিক্ষোভ, রবীন্দ্র ভারতীতে পুলিশ পোস্টিং চেয়ে হাইকোর্টে কর্তৃপক্ষ
    এই সময় | ২৬ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১ মার্চের ঘটনার পর ক্যাম্পাসে পুলিশ আউটপোস্ট তৈরির পরামর্শ দিয়েছিল লালবাজার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করতে চাননি। বরং বিভিন্ন শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠনের মতামত নেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসে পুলিশ আউটপোস্টের বিরোধিতাই করেছে বিভিন্ন শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠন।

    শিক্ষাঙ্গনে পুলিশিংয়ের বিরোধিতায় সরব বহু বিশিষ্ট শিক্ষাবিদও। এ রকম কোনও মতামত গ্রহণের তোয়াক্কা না–করেই রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিটি রোড ও জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে পুলিশ পোস্টিং চেয়ে সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন! আদালত আপাতত শুধু রবীন্দ্র ভারতীর জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের প্রবেশের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে।

    বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মঙ্গলবারের নির্দেশ, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য যাতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেন, গিরিশ পার্ক থানাকে অবিলম্বে সে জন্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা আধিকারিক থানায় অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ হাইকোর্টের। বিটি রোড ক্যাম্পাসের বিষয়টি নিয়ে আজ, বুধবার ফের আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীকে পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতি।

    হাইকোর্টে মামলায় রবীন্দ্র ভারতীর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অভিযোগ করেছেন, জোড়াসাঁকো এবং বিটি রোড ক্যাম্পাসে তাঁকে এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের শাসকদলের ছাত্র ও শিক্ষাকর্মী সংগঠন এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমিতি ‘ওয়েবকুপা’ সোমবার থেকে জোড়াসাঁকোয় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। যদিও ওই সংগঠনগুলির পাল্টা বক্তব্য, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আশিস সামন্তরা পদে রয়ে গিয়েছেন। এরই বিরোধিতা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবিও উঠেছে বিক্ষোভে।

    তৃণমূল ছাত্র, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সংগঠনের অভিযোগ, বিটি রোড ক্যাম্পাসেই রবীন্দ্র ভারতীর যাবতীয় অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজকর্ম হয়। অথচ এক বছরের বেশি সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সেখানে আসেনইনি। এমনকী রেজিস্ট্রার–সহ অন্য আধিকারিকরাও উপাচার্য না–আসায় বিটি রোড ছেড়ে জোড়াসাঁকোতেই বসে থাকেন। সব মিলিয়ে ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা তুঙ্গে। তারই প্রতিবাদে সোমবার থেকে লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়েছে। অথচ ভারপ্তাপ্ত উপাচার্য মূল ক্যাম্পাসে না এসে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন!

    যদিও শুভ্রকমল সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, ‘আমি নিজে এসে উপাচার্যর চেয়ারে বসিনি। আচার্য–রাজ্যপাল আমাকে সব ক্ষমতা দিয়ে উপাচার্য পদে মনোনীত করেছেন। এই নিয়োগের বিরোধিতা করে রাজ্য হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। আদালত সাড়া দেয়নি। বরং সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের সার্চ কমিটি গঠনের। তাদের সুপারিশ মেনে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হলেই আমি চলে যাব।’

    অন্য দিকে, শাসকদলের ছাত্র ও শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, ইতিমধ্যে সার্চ কমিটির সুপারিশ মেনে মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে স্থায়ী উপাচার্যের নাম সুপারিশ করেছেন। আচার্য-রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তা নিয়ে গড়িমসি করছেন। অবিলম্বে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। অস্থায়ী উপাচার্যের কাজকর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। এই সব দাবি, অভিযোগ নিয়েই বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে ওই ঘরের সামনেই অবস্থানে বসেন তাঁরা।

  • Link to this news (এই সময়)