চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
রাজবংশী ভাষার প্রসার, প্রচার এবং চর্চার জন্যই গঠন করা হয়েছিল রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে ১৩টি বছর। তিন বার চেয়ারম্যান বদল করা হয়েছে। তবে এই অ্যাকাডেমির ব্যাপ্তি এবং কাজ কতটুকু হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর মধ্যেই ফের নতুন চেয়ারম্যান পাচ্ছে অ্যাকাডেমি। বংশীবদন বর্মনকে সরিয়ে হরিহর দাসকে চেয়ারম্যান করার পর, রাজনৈতিক সমীকরণ কী দাঁড়াল, এইসব নিয়ে আলোচনা হলেও অ্যাকাডেমির কাজ আগামী দিনে কতটা ফলপ্রসূ হবে, সেটাই এখন বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১২ সালে কোচবিহারে রাজ্যের তৃণমূল সরকার রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি স্থাপন করে। তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের অধীনে এই অ্যাকাডেমি এখনও চলছে। নিজেদের স্বশাসিত করার বারেবারে দাবি থাকলেও সেই দাবি আজও পূরণ হয়নি। পাশাপাশি নিজস্ব কোনও ভবন নেই এই অ্যাকাডেমির। কোচবিহার শহরের ভিক্টর প্যালেসে কয়েকটি ঘর নিয়েই কাজকর্ম চালানে হচ্ছে। তথ্য–সংস্কৃতি দপ্তরের কর্মীরাই কাজকর্ম সামলান। আলাদা করে সেভাবে কর্মী নিয়োগ করা হয়নি।
একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর কিছু কাজ করেন। একজন সচিব নিয়োগ করা হয়েছে। ব্যাস, ওই পর্যন্তই। গত এক দশকেরও বেশি সময়ে এখানে কাজ বলতে অ্যাকাডেমির মুখপত্র ভোগার পাঁচটি সংখ্যা বের হয়েছে। রাজবংশী ভাষায় অভিধান তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। ‘ক’ থেকে ‘ঝ’ পর্যন্ত সেই কাজ হবার পর আটকে আছে। ১০ থেকে ১২টি বই প্রকাশিত হয়েছে। কয়েকটি সেমিনার হয়েছে। এর বাইরে আর সে ভাবে কিছুই হয়নি।
প্রয়াত প্রসেনজিৎ বর্মন ছিলেন রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমির প্রথম চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে বিজয়চন্দ্র বর্মনকে চেয়ারম্যান করা হয়। পরে তাঁকে সরিয়ে বংশীবদন বর্মনকে চেয়ারম্যানের পদে বসায় রাজ্য সরকার। এবার তাঁকে সরিয়ে হরিহর দাসকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বুধবার তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। সেই উপলক্ষে অ্যাকাডেমিতে ছোট অনুষ্ঠান করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার ভিক্টর প্যালেসে তার প্রস্তুতি নজরে আসে। তবে প্রশ্ন, অ্যাকাডেমির কাজে কতটা গতি আনতে পারবেন নয়া চেয়ারম্যান। কারণ আর্থিক প্রতিকূলতা প্রথম দিন থেকেই রয়েছে। কোনও কাজ স্বাধীনভাবে করতে পারেনি অ্যাকাডেমি। স্বশাসিত না হওয়ায় তাদের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়। এখানে আলাদা লাইব্রেরি, অডিটোরিয়ামের দাবি রয়েছে। ভাষা, সাহিত্যচর্চার জন্য স্কলার নেওয়ার বিষয়টিও রয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান অবশ্য বলেন, ‘সবে দায়িত্ব পেয়েছি। অ্যাকাডেমির কাজকর্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার মূল উদ্দেশ্য।