• ‘কৌশল্যা’র ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্ষোভ এলাকায়
    এই সময় | ২৬ মার্চ ২০২৫
  • সুমন ঘোষ ■ খড়্গপুর

    পোঁতা হয়েছে কিছু গাছের গুঁড়ি। তা ছাড়া আর কোনও কাজই হয়নি। অথচ এই কৌশল্যা পুকুরকে বাঁচাতে ২০২১ সালে গ্রিন সিটি প্রকল্পে সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল পুরসভা। পুকুরটি খড়্গপুর পুরসভা এলাকার তিনটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের প্রাণও বলা যায়। সেই কৌশল্যা পুকুর এখন সঙ্কটে। ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ কিছুই এগোয়নি। তা হলে বরাদ্দ টাকা গেল কোথায়? তার উত্তর জানতে চেয়েছিলেন এলাকার মানুষ। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। তাই ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার মানুষজন।

    পুকুর এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার বাঙালি সমাজের কাছে ধর্মীয় রীতি পালনেও পুকুরের অবদান অনস্বীকার্য। শহরের কৌশল্যা এলাকায় গণপতি বোস সরণির পাশে পুকুরটি অবস্থিত। কৌশল্যা এলাকায় পুকুর বলে নাম হয় কৌশল্যা পুকুর। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, তখন বেশ বড় পুকুর ছিল। ধীরে ধীরে সেই পুকুর ভরাট হতে হতে বর্তমানে তিন বিঘের মতো এলাকায় দাঁড়িয়েছে। পুকুরটি ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কৌশল্যা এলাকা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাঁজোয়াল, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাপেটাপুরের মানুষজন ব্যবহার করেন।

    পুজোর মঙ্গলঘট ডোবানো থেকে বিয়ের আগে বর-কনেকে পুকুরে স্নান, গাজনে সন্ন্যাসীদের স্নান–সহ বিভিন্ন কাজে পুকুরটিকে ব্যবহার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা বাপন দাস, সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রীতম সাধু খাঁ-রা জানান, পুরোনো ঘাট সংস্কার করার কথা ছিল। আরও একটি নতুন ঘাট তৈরি করা হবে। পুকুরের চারদিকে তিন ফুট করে রাস্তা থাকবে। বসার জন্য চেয়ার রাখা হবে। চারদিক আলোকিত করা হবে। পাশে একটি ঘরও করা হবে। প্রয়োজনে লোকজন ওই ঘরে পোশাক বদল করতে পারেন। তাঁরা বলেন, 'কিন্তু সে সব আর হচ্ছে কোথায়। গাছের গুড়ি পুঁতে রাখা হয়েছে। কয়েক দিন আগে দেখি কাজ শুরু হয়েছে। পচে নষ্ট হয়ে যাওয়া গাছের গুড়ি দিয়ে চারদিক বাঁধার কাজ চলছে। আমরা বাধা দিয়েছিলাম।

    বিষয়টি পুরপ্রধানকে জানিয়েছিলাম।' এলাকার মানুষের দাবি, খড়্গপুরের পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেছিলেন, 'আগের পুরপ্রধান কী করেছেন জানি না। তবে এখন বেশি টাকা নেই, যে ভালো ভাবে কাজ করা যাবে।'

    খড়্গপুরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার বলেন, 'আমার সময়ে গাছের গুড়ি পোঁতা হয়েছিল। তার জন্য ২০-২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়ে থাকতে পারে। বাকি টাকা থেকে গিয়েছে। এখন তো আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।'

    স্থানীয় বাসিন্দা কমলকৃষ্ণ বেরা, সুচরিতা করেরা বলেন, 'আমরা চাই প্রশাসন কাজটি ঠিক ভাবে করুক। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমরাও সহযোগিতার হাত বাড়ব। কাজটি না হলে পুকুরটি ধ্বংস হয়ে যাবে। তাতে এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু পুরসভার কোনও উদ্যোগ দেখছি না।' খড়্গপুরের পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেন, 'কাজটি অনেক দিনের পুরোনো। ফের কাজ শুরু হয়েছে। এলাকাবাসীর কিছু দাবি রয়েছে বলে শুনেছি। সব দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।'

  • Link to this news (এই সময়)