কলকাতার একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে কিডনি পাচার চক্রের ‘যোগসাজশ’? অশোকনগরের ঘটনায় পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বুধবার এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের নাম গুরুপদ জানা, মৌসুমী সর্দার ও পিয়ালী দে। গুরুপদ এই গোটা চক্রের ‘কিংপিন’ বলেই দাবি পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত তিন জন কিডনি পাচার সম্পর্কিত সমস্ত ‘অবৈধ’ প্রক্রিয়া চালাত কলকাতার ওই নার্সিংহোমের মাধ্যমে। সেখানে থেকেই কিডনি পাচারের র্যাকেট চলত বলেই অনুমান তদন্তকারীদের। অশোকনগরে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে কিডনি পাচারের পর্দাফাঁস হয়েছে। তাঁর স্ত্রীর কিডনি দানে ‘সম্মতি’ দেয়নি প্রশাসন। তার পরেও কী ভাবে কলকাতার নামী ওই বেসরকারি হাসপাতালে এই ‘অপরাধ’ সংগঠিত হলো, সেই উত্তর অধরা তদন্তকারীদের কাছে।
তদন্তকারীদের দাবি, এই পাচার চক্রের মাথা ছিলেন ধৃত গুরুপদ। তিনি নিজেকে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নিজের নাম ‘অমিত’ বলে সবাইকেই পরিচয় দিতেন। তদন্ত করে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, করোনাকাল থেকেই চলছে এই কিডনি পাচার চক্র। ঋণগ্রস্তদের ফাঁদে ফেলা হতো।
এ যাবৎ কতজন কিডনি দেওয়ার আবেদন স্বাস্থ্য দপ্তরে করে, সেই রিপোর্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, বিগত দু’বছরে বারাসত মহকুমা এলাকায় প্রায় ৫০ জন কিডনি দান করতে আবেদন করে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি আবেদন এসেছে অশোকনগর থানা এলাকা থেকে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে প্রায় ২০ জন। তালিকায় আছে মধ্যমগ্রাম, হাবড়া থেকে বারাসতও।
উল্লেখ্য, গত রবিবার বিকাশ ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে অশোকনগর থানা। তাঁকে জেরা করেই জানা যায়, দেনার দায়ে ডুবে থাকা অশোকনগর থানা এলাকার এক বাসিন্দাকে বিকাশ রাজি করিয়েছিলেন কিডনি বিক্রির জন্য। ভিন রাজ্যের একজন ওই ব্যক্তির স্ত্রীর কিডনি সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ক্রয় করে বলে দাবি করা হয়। সেই তদন্তে নেমেই ‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে’ বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।