ডুয়ার্সে কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থার চা বাগানের বিরুদ্ধে এফআইআর
বর্তমান | ২৭ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: কোটি কোটি টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ড বকেয়া। তারই জেরে ডুয়ার্সে কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থার তিনটি চা বাগানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল খোদ পিএফ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, কেন্দ্রের ভারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থাটি ওই তিনটি বাগানে দীর্ঘদিন প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা সময়মতো জমা করছে না। ফলে বকেয়ার পরিমাণ বাড়তে বাড়তে পাঁচ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বারবার নোটিস ইস্যু করার পরও বকেয়া টাকা জমা না পরায় সম্প্রতি ওই তিন চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার পবন বনশাল। প্রয়োজনে বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
এদিন আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার বলেন, ওই তিনটি চা বাগানের বকেয়া প্রভিডেন্ট ফান্ড জমা নিয়ে যতবারই জানতে চাওয়া হয়েছে, বাগানের তরফে উত্তর এসেছে, ফান্ড মিলছে না। আইন অনুযায়ী বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। যদিও এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার সন্তোষকুমার ঝা।
এই ইস্যুতে অবশ্য তোপ দাগতে ছাড়েননি তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল সোনার। তিনি বলেন, কেন্দ্রের অধীনস্থ ওই তিনটি চা বাগানের হাল গত দু’বছর ধরেই খুবই খারাপ। শ্রমিকদের বহুদিনের মজুরি বকেয়া। বাগান কর্মীরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। পিএফও জমা পড়ছে না। সমস্তরকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিকরা। এদিকে, বিজেপি সমর্থিত ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি যুগল ঝা’র মন্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থার বাগান বলেই কি পিএফ না দিয়ে ছাড় পেয়ে যাবে? আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, যে বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পিএফ দেবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বকেয়া প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা না পরায় গত কয়েকমাস ডুয়ার্সের ৬টি চা বাগান মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পিএফ কর্তৃপক্ষ। ভবিষ্যনিধি প্রকল্পের ২ কোটি
৪২ লক্ষ টাকা বকেয়া থাকায় মঙ্গলবারই এফআইআর করা হয়েছে আলিপুরদুয়ারের একটি চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গত পাঁচ বছরে এনিয়ে ৩৩টি চা বাগান মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হল বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার। তিনি বলেন, পিএফ জমা না দেওয়ায় পাঁচটি চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কেন চা বাগানের কর্তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না, সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে ধরানো হয়েছে নোটিসও।