• বিশ্বভারতীর শিক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবেন নয়া উপাচার্য
    বর্তমান | ২৭ মার্চ ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: বিশ্বভারতীর শিক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হলেন নবনিযুক্ত উপাচার্য প্রবীরকুমার ঘোষ। তার প্রেক্ষিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শনের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। প্রাক্তন বিতর্কিত উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আমলে ক্যাম্পাসে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়। লাটে ওঠে শিক্ষা ব্যবস্থা। র‍্যাঙ্কিং কার্যত তলানিতে ঠেকে। এই বিষয়গুলি জানার পর পদে যোগদান করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কাজে গতি আনতে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন প্রবীরবাবু। তারই পদক্ষেপ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন খতিয়ে দেখতে তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন। কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত বিশ্বভারতীর শিক্ষার হাল এই মুহূর্তে অত্যন্ত করুণ। সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং সেই কথায় বলে। ২০১৬ সালে প্রকাশিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র‍্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (এনআইআরএফ) অনুযায়ী বিশ্বভারতী ১১তম স্থানে ছিল। এটাই ছিল বিশ্বভারতীর সেরা র‍্যাঙ্ক। তখন উপাচার্য ছিলেন সুশান্ত দত্তগুপ্ত। ২০১৮ সালে বিশ্বভারতীর দায়িত্ব নেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কিন্তু তাঁর তুঘলকি কার্যকলাপ ও দমননীতিতে ক্যাম্পাসে কার্যত ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়। বিরুদ্ধাচারণ করলেই অধ্যাপক, পড়ুয়াদের কথায় কথায় শোকজ- সাসপেন্ড শুরু করেন। শিক্ষা ব্যবস্থায় তার প্রভাব পড়ে। ২০১৮ সালে র‍্যাঙ্কিং বিশ্বভারতীর নামে ৩১তম স্থানে। এরপর পর্যায়ক্রমে ২০১৯ সালে ৩৭ তম, ২০২০ সালে ৫০তম ও ২০২১ সালে ৬৪তম স্থানে নেমে আসে। ২০২২ সালে নেমে যায় ৯৮তম স্থানে। এরপর দেশের সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাতেও ঠাঁই হয়নি ঐতিহ্যবাহী বিশ্বভারতীর। এমনকী, একইভাবে ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (সংক্ষেপে ন্যাক) এর গ্রেডেও অবনমন হয়। সেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতে তৎপর হলেন নতুন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী কাল শুক্রবার থেকে টানা ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে প্রবীরবাবু পরিদর্শন করবেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো তাঁর সঙ্গে থাকবেন। প্রথম দিন পল্লি সংগঠন বিভাগ, এরপর পয়লা এপ্রিল পল্লিশিক্ষা ভবন, ২ এপ্রিল বিনয় ভবন ও তার পরদিন শিক্ষাভবন পরিদর্শন করবেন তিনি। এরপর ৪ ও ৮ এপ্রিল যথাক্রমে সঙ্গীত ও কলাভবন, ৯ এপ্রিল বিদ্যাভবন ও সব শেষে ১১ এপ্রিল ভাষাভবন পরিদর্শন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। মূলত অধ্যাপক, শিক্ষা কর্মী ও পড়ুয়াদের সাক্ষাৎ করে গত এক বছরে কী কী কাজ হয়েছে, তার খতিয়ান দেখবেন। বিভাগগুলি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তা তুলে ধরবে। এছাড়া, আগামী পাঁচ বছরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের লক্ষ্য পূরণের স্পষ্ট রূপরেখাও তিনি জানতে চাইবেন। সেই কাজে পরিকাঠামগত সাহায্য লাগবে কি না, সেই বিষয়গুলিও জানতে চাওয়া হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, বিভাগগুলির শিক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতেই উপাচার্য এই পরিদর্শন করবেন। এতে সমস্যা থাকলে সেগুলিও সত্বর সমাধান করা হবে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)