সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: মাঠের মধ্যে কয়েক বিঘা এলাকা উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। পাঁচিলের ভেতরে বিশাল পুকুর, চাষের জমি ও পোল্ট্রি মুরগির ফার্ম। কয়েকটি গবাদি পশুও রয়েছে। আর রয়েছে ঝাঁ চকচকে অফিস ঘর। রীতিমতো ফার্ম হাউস খুলে সেখান থেকেই চলত মাদকের কারবার। প্রাথমিকভাবে তেমনটাই মনে করছে পুলিস। তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাতে রঘুনাথগঞ্জের মথুরাপুরে এমনই জায়গার হদিশ পায় রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিস। সেই ফার্ম হাউসে হানা দিয়ে সেখান থেকে আড়াইশো গ্রামেরও বেশি হেরোইন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। দু’টি স্কুটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। হেরোইন পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই যুবককে হেফাজতে নিয়ে জেরা করেই এমনই তথ্য হাতে উঠেছে এসেছে পুলিসের। এই মাদক কারবার কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিস।
এ প্রসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জ থানার এক পুলিস আধিকারিক জানিয়েছেন, মাদক কারবারে জড়িত দুই যুবককে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি জায়গায় খোঁজ মেলে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় আড়াইশো গ্রাম হেরোইন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেখান থেকেই তারা এই কারবার চালাত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, রঘুনাথগঞ্জ শহর থেকে কয়েক কিমি দূরে মথুরাপুরে আদিবাসী পাড়ায় মাদক কারবারিদের ডেরার সন্ধান পায় পুলিস। বাইরে থেকে সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝার কোনও উপায় নেই ভেতরে কী হয়। এক মানুষের বেশি উঁচু পাচিল দেওয়া। বিশাল গেট খুললে দেখা মিলবে ভেতরে বড় একটি পুকুর। পুকুরে মাছ চাষ করা হয়।
ভেতরে জমিতে ফসল ও চাষ হয়। আগে ফার্মে পোল্ট্রি মুরগি চাষ হলেও বর্তমানে তা আর হয় না। এদিকে, খামার হাউসের আড়ালে গোপনে রমরমিয়ে চলত মাদক কারবার। এদিন রাতে দুই ধৃতকে নিয়ে ফার্ম হাউসে যায় পুলিস। সেখান থেকে দু’টি স্কুটি বাজেয়াপ্ত করে। স্কুটির সিটের তলায় মাদক লুকানো ছিল। সেগুলো সময় ও সুযোগ বুঝে পাচার করা হত বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান করছে পুলিস।
প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে প্রায় তিন কিলো হেরোইন সহ তালাইয়ের ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে রঘুনাথগঞ্জের কৃষ্ণশাইলের যুবক কুরবান শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতকে জেরা করেই পরদিন সকালে রঘুনাথগঞ্জের উমরপুরে জাতীয় সড়ক সংলগ্ন একটি হোটেল থেকে লালগোলার যুবক নাজির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুলিস।
ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে মথুরাপুরের ডেরার বিষয়ে জানতে পারে পুলিস। পূর্বে বাজেয়াপ্ত করা হেরোইনগুলো এখান থেকেই পাচার করা হচ্ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।