বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হবেন, এখন সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে বিজেপি কি নতুন কাউকে দায়িত্ব দেবে, না রাজ্য সভাপতি পদে থেকে যাবেন সুকান্তই, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দলের কেউই এ নিয়ে খুব স্পষ্ট করে কিছু জানাচ্ছেন না। তবে এই প্রক্রিয়া আপাতত কত দূর এগিয়েছে, দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, তাঁর কাছে দলের কর্মীরাও এ প্রশ্ন করছেন। তবে এ সিদ্ধান্ত দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বই নেবেন। আর তা সময়মতো, নিয়ম মেনেই হবে। একই সঙ্গে জানান, কথাবার্তা চলছে। তবে এখনই চূড়ান্ত কিছু হয়নি।
এ দিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বিজেপিতে প্রতি তিন বছর অন্তর সাংগঠনিক নির্বাচন হয়। সেটা চলছে। শুধু এ রাজ্যে নয়, সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই প্রক্রিয়া এক। সর্বভারতীয় নেতারা যাঁকে উপযুক্ত মনে করবেন, তাঁকে দায়িত্ব দেবেন। আমাদের আগামী বছর নির্বাচন বলে হয়ত আলাদা মনে হচ্ছে। আমাকেও কর্মীরা বলছেন, দাদা নতুন রাজ্য সভাপতি কবে ঘোষণা হবে? আমি অপেক্ষা করতে বলেছি। দলের উপর আস্থা রাখতে বলেছি।’
দিলীপ আরও জানান, ব্লক স্তর হোক বা রাজ্যস্তর, পদাধিকারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিজেপির কিছু নিয়ম রয়েছে। নমিনেশন পর্ব থাকে। রাজ্য সভাপতি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সেই নমিনেশন এখনও হয়নি বলেই জানান তিনি। যে দিন নমিনেশন হবে সে দিনই বা এক দু’দিনের মধ্যে মুখ নির্বাচনও হয়ে যাবে বলে জানান দিলীপ।
২০২১-এর বিধানসভা ভোটের পর দিলীপ ঘোষের জায়গায় রাজ্য সভাপতি করা হয় সুকান্ত মজুমদারকে। এই পদে তাঁর তিন বছর পার হয়ে গিয়েছে। সুতরাং রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণার ক্ষেত্রে বিজেপির এখন আর কোনও বাধা নেই। তবে অনেকেই মনে করছেন, এ বারের বিধানসভা ভোট বিজেপির জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাই ভোটের আগে কোনওরকম তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না দল। ‘দের আয়ে পর দুরস্ত আয়ে’তে ভরসা রাখছে তারা।
অনেকেই বলছেন, সুকান্ত মজুমদারকে হয়ত আগামী ভোট পর্যন্ত রেখে দিতে পারে বিজেপি। কারণ, বিজেপির পদাধিকারী বদল নিয়ে এ রাজ্যে অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। সাম্প্রতিক সংযোজন, সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নাম ঘোষণা। এ নিয়ে জায়গায় জায়গায় দলের অন্দরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ভোটের আগে নতুন করে দলের অন্দরে হয়তো আর ঝাঁকুনি দিতে চাইবে না বিজেপি।
তবে অনেকে আবার এও বলছেন, ইদানিং দিলীপ ঘোষ যে ভাবে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে সক্রিয় হয়েছেন, তাতে পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হিসাবে ফের তাঁকে নির্বাচিত করা হলে, খুব অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। যদিও দিলীপ ঘোষ একেবারেই এই হঠাৎ করে ফর্মে ফেরার বিষয়টি মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘আমার ফর্ম একই রকম। গত ১০ বছর ধরে একই ফর্মে আছি। যাঁরা আমাকে জানেন না, তাঁরা এই কথা বলতে পারে।’ একই সঙ্গে দিলীপ জানিয়ে দিয়েছেন, সব সিদ্ধান্ত দিল্লি থেকেই হবে।