বর্তমান পরিস্থিতিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা গুরুত্বপূর্ণ কোনও ব্যক্তিকে নিয়ে সেমিনার, মিটিং করা যাবে না, বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি এ দিন প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় বলে জানা ছিল, কেন রাজনৈতিক কোনও নেতা সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন? এই বিষয়টির প্রভাব পড়বে জেনেও তিনি কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন, তা আদালতের কাছে স্পষ্ট নয়।’
রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে এ দিন বলেন, ‘যাদবপুরে গুণ্ডারাজ চলছে। ২০১৪ সালের পর শ্লীলতাহানির মামলা রুজু হয়েছিল। একাধিক এফআইআর হয়। কিছু সময় বশ মানে না এমন ঘোড়া ছুটে বেড়াচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। আদালত যা নির্দেশ দেবে তা মাথা পেতে নেব। এখন শুধু শান্তি চাই। বিশ্ববিদ্যালয় কিছু করছে না। আমরা নিরুপায়।’
প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের কোনও ক্ষমতা থাকে না। তাঁদের হাতে কোনও অস্ত্র থাকে না। সেই ক্ষেত্রে কেন রাজ্য পুলিশের সাহায্য নিতে চান না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ?’ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী ঋজু ঘোষাল বলেন, ‘আমরা চিঠি লিখেছি। উচ্চ শিক্ষা দপ্তরকে টাকার কথা জানানো হয়েছে।’
এ দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করুন। উপাচার্য-সহ বাকিদের ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। তাঁরা চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হবে। প্রথমে যাঁরা ছাত্র নন তাঁদের বার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই সময়ে বামেদের কিছু ছাত্র সংগঠন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব হন। বিক্ষোভ দেখানো হয় ব্রাত্যকে ঘিরে। তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। পাল্টা ছাত্রদের অভিযোগ ছিল, ব্রাত্যর গাড়ির ধাক্কায় আহত হন এক ছাত্র।
এই ঘটনার পরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, প্রতি গেটে রাজ্য পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল একটি জনস্বার্থ মামলা। বৃহস্পতিবার সেই মামলাটির শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।