এই সময়, ময়নাগুড়ি: শিক্ষিকাদের কমন রুমে সিসিটিভি ক্যামেরা। মনিটর প্রধান শিক্ষকের দপ্তরে। অভিযোগ, অফিসে বসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কমন রুমে থাকা শিক্ষিকাদের ছবি নিয়মিত দেখেন। এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ শিক্ষক–শিক্ষিকারা বুধবার কমন রুম ছেড়ে মুক্তমঞ্চে বসে প্রতিবাদ জানান।
ঘটনাটি ময়নাগুড়ি ব্লকের মাধবডাঙ্গা এলাকার একটি স্কুলের। তবে পঠনপাঠন অব্যাহত রেখে শিক্ষক, শিক্ষিকারা ক্লাস নিলেও কমন রুমে বসতে নারাজ তাঁরা। স্কুলের শিক্ষিকাদের বক্তব্য, ‘আমরা ক্লাস নেওয়ার পরে কমন রুমে এসে বসি। সেখানে একটু রিলাক্সড মুডে থাকি। কেউ হয়তো টেবিলে মাথা রেখে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, তারা কী খাচ্ছেন, কী অবস্থায় রয়েছেন সেই ছবিগুলো সিসিটিভির মনিটরে জুম করে দেখা হয়।’
শিক্ষিকাদের অভিযোগ, ‘সিসিটিভির ছবি পেন ড্রাইভে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সব ছবি বাইরেও তো যেতে পারে।’ এক শিক্ষিকার বক্তব্য, ‘দিন কয়েক আগে স্কুলের দশম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ঘরে ঢুকলে বিষয়টি প্রথম নজরে আসে। তারাই শিক্ষিকাদের জানায়।’
স্কুলের এক শিক্ষক জানান, স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ে ওই সিসিটিভি বসানো হয়েছিলো। তাতে স্কুলের সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু কোনও রকম রেজুলেশন ছাড়া স্কুলের কমন রুমে সিসিটিভি বসানো হয়েছে, যা নিয়ম বিরুদ্ধ। কমন রুম থেকে অবিলম্বে সিসিটিভি খোলার দাবি জানান তিনি।
অন্যদিকে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের নির্দেশে পরীক্ষার আগে স্কুলে সিসিটিভি বসানো হয়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে স্কুলে বেশ কিছু অনিয়ম চলছিল। যেমন, মিড-ডে মিল ঠিকভাবে পরিবেশন করা হতো না৷ স্কুলে জলের ব্যবস্থা ছিল না।
এমনকী, স্কুলের বিভিন্ন জিনিস চুরি হয়ে যাচ্ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনেক কিছু ঠিকমতো হচ্ছে। স্কুলে ওয়াটার এটিএম বসানো হয়েছে। সিসিটিভি বসানোর পরে চুরি বন্ধ হয়েছে। তবে কমন রুমের সিসিটিভি না খোলার দায় ম্যানেজিং কমিটির।’
তিনি জানান, এই বিষয়ে তিনি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে কথা বললে তাকে বলা হয়, পর্ষদের পক্ষ থেকে পরবর্তী কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সিসিটিভি খোলা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মহেশ্বর বিশ্বাস জানান, শিক্ষক, শিক্ষিকারা জানালে তাঁরা এই বিষয়ে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন।
তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জলপাইগুড়ির জেলা স্কুল পরিদর্শক (হাই) বালিকা গোলে বলেন, ‘এই বিষয়টি স্কুল পরিচালন কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই।’