সঞ্জয় চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি
কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের মতো ‘বইপাড়া’ হবে শিলিগুড়িতেও! এ বারের পুরসভার বাজেটে শিলিগুড়ির কলেজ পাড়ায় ‘মিনি কলেজ স্ট্রিট’ গড়ে তোলার প্রস্তাবে সাড়া পড়ে গিয়েছে শহরে। চিলড্রেন পার্কের কাছে প্রায় সাত কাঠা দাবিদারহীন জমি পড়ে রয়েছে।
ওই জমিতে কয়েকটি ছোটখাটো বইয়ের দোকান রয়েছে। সেখানেই তিন তলা ভবন তৈরি করে বইপাড়া তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। মেয়রের সিদ্ধান্তে খুশি শিলিগুড়ি মহকুমা পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির এগজ়িকিউটিভ কমিটির সদস্য মধুসূদন পাল।
তিনি বলেন, ‘শিলিগুড়িতে বইয়ের বাজার বিশাল। সেটা বইমেলার বিক্রি থেকেই প্রমাণিত। প্রতি বছরই বিক্রি বাড়ছে। সবচেয়ে বড় কথা, নানা ভাষার বইয়ের ক্রেতা রয়েছে এখানে। ফলে এক ছাতার তলায় বাজারের ভীষণ প্রয়োজন। মেয়রের এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।’
কেন এই উদ্যোগ?
শুধু বইমেলা নয়, স্কুল ও কলেজের বই বিক্রির হিসাব করলেই কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা হয় প্রতি বছর। শিলিগুড়িতে ইদানীং কিছু প্রকাশনা সংস্থাও গড়ে উঠেছে। কলকাতায় বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে কলেজ স্ট্রিট। সারি সারি বইয়ের দোকান। নামী দামি প্রকাশনা সংস্থার অফিস। কিন্তু নির্দিষ্ট করে কলেজ স্ট্রিটের মতো বইপাড়া নেই।
শহরের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই সমস্ত দোকান। ফলে কোনও একটি নির্দিষ্ট বইয়ের খোঁজে বার হলে গোটা শহর চষে বেড়াতে হয়। এ বার সেই সমস্যা মেটাতে শিলিগুড়ির কলেজ পাড়ায় বইপাড়া গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা শুরু করেছেন মেয়র। শিলিগুড়ি মহকুমা পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতম দেব মেয়র পদে বসার পরেই দাবিদারহীন ওই জমিতে বইপাড়া গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেন।
দফায় দফায় পুস্তক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। বাজেটেও বইপাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই শিলিগুড়ির পুস্তক ব্যবসায়ী মহলে সাড়া পড়ে গিয়েছে। গৌতম বলেন, ‘শিলিগুড়িকে সংস্কৃতির সমস্ত স্তরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য। সেই কারণেই শিলিগুড়িতে একটি বইপাড়া তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুস্তক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আর এক দফা কথা বলার প্রয়োজন। সেটা হলেই কাজে নামার পরিকল্পনা করা হবে।’
মেয়রের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশিষ্ট সমাজসেবী জয়ন্ত করও। সম্প্রতি তিনিও বইয়ের ব্যবসায় নেমেছেন। জয়ন্ত বলেন,‘মেয়রের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। শিলিগুড়িতে একটি বইপাড়ার ভীষণ প্রয়োজন। তাতে পাঠক এবং পুস্তক বিক্রেতা, সকলেই সমান ভাবে উপকৃত হবে।’