• বাড়ির ছাদেই ঘুমিয়ে লালু-ভোলুরা, সন্ধ্যায় জ্বলে প্রদীপ, সমাধি ম-ম করে ফুল-ধূপের গন্ধে
    এই সময় | ২৮ মার্চ ২০২৫
  • বাড়ির ছাদে রয়েছে সমাধি। ঘুমিয়ে রয়েছে লালু ও ভোলু-সহ মোট চারজন! প্রত্যেকেই জার্মান শেফার্ড। সেখানে প্রতিদিন ফুল দেওয়া হয়, জ্বলে প্রদীপও। তারা যখন বেঁচে ছিল, তখন বাড়ির ছেলে মেয়ের মতোই তাদের সঙ্গে ব্যবহার করা হতো। খাওয়া-দাওয়া থেকে পুজোয় জামা কাপড়—সবই হতো। প্রিয় পোষ্যদের হারিয়েও তাদের ভোলেনি পরিবার। বাঁকুড়া শহরের সুকান্তপল্লির মণ্ডল দম্পতির বাড়িতে গেলে আপনার চোখে জল আসবেই। তবে সারমেয় প্রেম কিন্তু তার বেড়েছে বইকি কমেনি।

    বর্তমানে এ পাড়া-ও পাড়া মিলিয়ে প্রায় জনা পঁচিশেক পথ কুকুরের অন্নদাতা হয়ে উঠেছেন মণ্ডল দম্পতি। পেশায় জীবন বিমা সংস্থার কর্মী গৌতম মণ্ডলের স্ত্রী শ্রাবণী মণ্ডল গৃহবধূ। শ্রাবণী মণ্ডল প্রতিদিন ভোর পাঁচটায় উঠে অবলা প্রাণীদের জন্য পরম যত্নে খাবার তৈরি করেন। নিজে হাতে করে তাদের খাইয়েও দেন। বাড়ির ডাইনিং রুমে বসিয়ে পরম যত্নে খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি পথ কুকুরদের প্রয়োজনীয় সমস্ত চিকিৎসার ব্যবস্থার দায়িত্বও নিয়েছেন তাঁরা।

    সন্তান স্নেহে বড় করে তোলা চার পোষ্যের সমাধিও তৈরি করেছেন নিজের বাড়ির ছাদে। ভোলু, ডায়না, বেবি, লালুর সমাধিতে এখনও রোজ নিয়ম করে ফুল, ধূপ দেন বাঁকুড়ার মণ্ডল দম্পতি।

    এ বিষয়ে গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘আমি ছোটো থেকেই পশু পাখি ভালোবাসি। এ সব অবলা প্রাণীদের প্রতি অবহেলা, অত্যাচার দেখে মন কাঁদতো। এদের দেখার মতো তো কেউ নেই। আমরাই আমাদের সাধ্যমতো সে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত অফিসের সময়টুকু বাদ দিয়ে সমস্ত পথ কুকুরদের নিয়েই আমাদের দিন কেটে যায়।’ অন্য দিকে শ্রাবণী মণ্ডল বলেন, ‘শনি ও রবিবার অফিস ছুটি থাকলেও আমাদের ছুটি নেই। ভোর থেকেই উঠে ওদের জন্য খাবার তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আদর যত্নে তাদের খাইয়ে পরম তৃপ্তি পাওয়া যায়।’ তিনিই জানিয়েছেন, সন্তানের মতো করে বড় করে তোলা চার সারমেয়র স্মৃতিতেই বাড়িতে সমাধি করা হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)